চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমনি ও প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বনানী থানায় র্যাব বাদি হয়ে মামলা দু’টি করে।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে র্যাব সদও দফতর থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে তাদের বনানী থানায় নেয়া হয়। পরে তাদেরকে বনানী থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।
ওসি জানান, তাদেরকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে পরীমনির বনানীর বাসায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাত ৮টার দিকে তাকে আটক করে র্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য জব্দ করেছে র্যাব।
এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজের বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব। পরীমনির দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব রাজের বাসায় অভিযান চালায়। প্রায় দু’ঘণ্টার অভিযান শেষে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রাজকে বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাব সদও দফতরে নেয়া হয়। রাজের বাসা থেকেও মাদক এবং পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
২০১৬ সাল থেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন পরী মনি
র্যাবের কমান্ডার খন্দকাল আল মঈন জানান, গ্রেপ্তারকৃত শামসুর নাহার স্মৃতি এই স্মৃতি মনি ওরফে পরী মনিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পিরোজপুরের কলেজে (এইচএসসি) জীবনে অধ্যায়নরত অবস্থায় চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। তিনি ২০১৪ সালে চিত্র জগতে অন্তর্ভুক্ত হন। এ পর্যন্ত তিনি ৩০টি সিনেমা এবং পাঁচ-সাতটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। পিরোজপুর থেকে ঢাকায় এসে চিত্র জগতে একটি দৃঢ় অবস্থান তৈরিতে গ্রেপ্তার মো. নজরুল ইসলাম রাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শামসুর নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করে থাকেন। মাত্রাতিরিক্ত সেবনের চাহিদা মেটানোর লক্ষে বাসায় একটি মিনিবার স্থাপন করেছেন। মিনিবার থাকায় তার ফ্ল্যাটে ঘরোয়া পার্টির আয়োজন পরিপূর্ণতা পেত বলে তিনি জানান। গ্রেপ্তার মো. নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের সরবরাহ করত এবং পার্টিতে অংশগ্রহণ করত বলে গ্রেপ্তাররা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
মাদ্রাসায় পড়েছিলেন নজরুল রাজ
র্যাব জানায়, নজরুল রাজকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ১৯৮৯ সালে খুলনার একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন। পরে ঢাকায় গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন বলে দাবি করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য ও ঠিকাদারী কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি শোবিজ জগতেও তাঁর অনুপ্রবেশ ঘটে। বিভিন্ন সিনেমা/নাটকে তিনি নানান চরিত্রে অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে নামে বেনামে প্রযোজনায় যুক্ত হন। রাজ মাল্টিমিডিয়া নামেও তাঁর একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ব্যবসায়িক জগত ও চিত্র জগতের দুই ক্ষেত্রে তাঁর সংযোগ থাকায় তিনি অতিরিক্ত অর্থ লাভের আশায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নিজ অবস্থানের অপব্যবহার করেন।
দিএডিটর৩৬৫/এমআরএম