লুৎফুল কবির রনি
তিনি বলেন, ”আমি সিনেমার ছাত্র এবং ইতিহাস ভালবাসি। আমি আপ্লুত যে সংগ্রহশালা তৈরি হয়েছে। সমস্তটা দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। সৃজনশীল মানুষজনের প্রতি আমার আগ্রহ রয়েছে, যেমন ধরুন কে এই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি শুরু করল এবং কে সাইলেন্ট ছবি তৈরি করলেন, টকিজ এল, সাদা-কালো এবং তারপরে রঙিন সিনেমা। যখনই এর ওপরে কোনও বই বা সিনেমা খুঁজে পাই সবসময়ই কিনে নিই। এগুলো আমার জানতে ভাল লাগে”।
হিন্দি চলচ্চিত্রের এক মাইলফলক ছবি বলা চলে থ্রি ইডিয়টসকে। দুই বন্ধু ফারহান আর রাজু মিলে তাদের তৃতীয় বন্ধু র্যাঞ্চো, যে কিনা কলেজ জীবনের শেষেই তাদের সাথে সব যোগাযোগ ছিন্ন করে লাপাত্তা হয়ে যায়, তাকে খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা এই ছবির মূল গল্প। আমির খান এখানে র্যঞ্চোর চরিত্রে অভিনয় করেন।
তারে জমিন পারে দেখি,আট বছরের এক ছোট ছেলে ইশান। বাবা তাকে উচিৎ শিক্ষা দেয়ার জন্য, আর তাকে আরো কড়া শাসনে রাখার জন্য পাঠিয়ে দেয় বোর্ডিং স্কুলে। এবিষন্নতায় ভোগা শুরু করে ইশান, ছেড়ে দেয় ছবি আঁকা। আর তখনই স্কুলে আসে এক নতুন আর্ট টিচার নিকুম্ভ। ইশানের এই বিষন্নতা তার চোখে পরে। আসলে ইশান এক মানসিক ব্যাধি, ডিসলেক্সিয়ায় ভুগছিল। ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির অক্ষর পড়তে ও চিনতে সমস্যা হয় যার কারণে প্রাথমিক ক্ষেত্রের পড়াশোনায় তারা পিছিয়ে থাকে। ছবিটিতে আমির খান অভিনয় করেছিলেন আর্ট টিচার নিকুম্ভের চরিত্রে। অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনা ও প্রযোজনাও করেছিলেন তিনি।
ভিনগ্রহী এক এলিয়েন পৃথিবীতে আসার পর চুরি হয়ে যায় তার রিমোট। নিজের গ্রহের সাথে যোগাযোগ করার একমাত্র যন্ত্র এই রিমোটটি ছাড়া সে কোনোভাবেই নিজের গ্রহের অধিবাসীদের ডাকতে পারবে না তাকে নিয়ে যাবার জন্য। তার সেই হারানো রিমোট খুঁজে পাওয়ার কাহিনিই নিয়েই পিকে ছবিটি আবর্তিত। কিন্তু বাইরের খোলস কমেডির হলেও আসলে ছবিটি ছিল ভারতের অসংখ্য ধর্মের মানুষদের মধ্যে চলে আসা ধর্মীয় বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতা, সমাজের বিভন্ন স্ববিরোধী বিধি-নিষেধ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের হর্তা-কর্তাদের উপর মানুষের অন্ধ বিশ্বাসকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক এক বিশ্লেষণ। এক ভিনগ্রহী প্রাণী সেজে আমির খান আমাদের সমাজের নানা স্ববিরোধিতা তুলে ধরেছেন এই ছবিটিতে।
দঙ্গল (২০১৬)হরিয়ানার এক কুস্তিগির মহাবীর সিং ফোগাত-এর নিজের দুই কন্যা গীতা আর বাবিতাকে কুস্তিগির বানানো ও তাদেরকে দিয়ে ভারতের জন্য কমনওয়েলথ প্রতিযোগিতায় সোনা জয়ের জন্য প্রস্তুত করার গল্প হচ্ছে ‘দঙ্গল‘। সত্য ঘটনা নিয়ে তৈরি এই ছবিটি ভারতীয় গ্রামীণ সমাজে ছেলেদেরকে ,মেয়েদের চেয়ে শ্রেয় মনে করার প্রবণতা ও সেই ধারণার অসারতাকে তুলে ধরে। এক বাবা তার সন্তানদের নিয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা, মেয়েদের সাথে তার সম্পর্ক, তার বাইরের কড়া অবয়বের পিছনে লুকিয়ে থাকা এক স্নেহবান পিতা আর সমাজের নানা বাধাকে তুচ্ছ করে নিজের মেয়েদেরকে নিয়ে তার এগিয়ে যাওয়া, একে ঘিরেই সিনেমাটি এগোতে থাকে। ছবিটিতে মহাবীরের চরিত্রে অভিনয় করেন আমির এবং তিনি ছবিটির অন্যতম প্রযোজক।
রঙ দে বসন্তি (২০০৬)এক ব্রিটিশ মেয়ের ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের নিয়ে এক ডকুমেন্টারি নির্মাণ করার জন্য ভারতে আসেন। সেখানে তার সাক্ষাৎ হয় ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া একদল বন্ধুর সাথে। সারাক্ষণ হাসি, ঠাট্টা, আড্ডায় মেতে থাকা সেই বন্ধুদের পছন্দ হয়ে যায় তার। প্রস্তাব দেয় তাদেরকে তার ডকুমেন্টারিতে অভিনয় করতে। প্রথমে অনাগ্রিহ দেখালেও তারা একপ্রকার অবজ্ঞার ছলেই রাজি হয়ে যায় অভিনয় করতে। নিজের দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের নিয়ে শুরুতে অনাগ্রহ দেখালেও ধীরে ধীরে সেই বন্ধুদের অন্দরমহলে পরিবর্তন আসতে থাকে। আর সেই সময়ে ঘটে যায় এমন এক দুর্ঘটনা যা তাদের জীবনের মোড় পাল্টে দেয়। তাদের মাঝেই যেন ফিরে আসে সেই পুরোনো বিপ্লবীদের আত্মা। সমসাময়িক অন্যান্য চলচ্চিত্র থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের এই ছবিতে আমির খান একইসঙ্গে দলজিৎ (ডিজে) ও বিপ্লবী চন্দ্রশেখর আজাদ-এর চরিত্রে অভিনয় করেন।
লগান(২০০৬) বলিউডের ইতিহাসে সেরার তালিকাতেই পড়ে। মুক্তির পর থেকেই লগান নিয়ে দেশজুড়ে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। তৃতীয় ভারতীয় ছবি হিসেবে অস্কারের বিদেশি ছবির বিভাগে জায়গা করে নিয়েছিল আমিরের এই ছবিটি।স্ক্রিপ্ট শোনার সময় ভারতীয় অভিনেতা আমির খান নিজের জন্য কোন চরিত্র বরাদ্দ, তা না জেনেই শুনেন।পরিচালক বা চিত্রনাট্যকারের কাছে অনুরোধ থাকে, গল্প বলার সময় যাতে তার চরিত্রটি গোপন রাখেন।তারপর যেই চরিত্রে নিজেকে দেখতে পান, সেটা বেছে নেন।আমির খান ‘দ্যা পারফেকশনিস্ট’ নামটি এমনি এমনি আসে নি।
আমির খান বলেন, ”একজন সৃজনশীল ব্যক্তি হিসাবে আমি বরাবর মনের কথা শুনে এসেছি। সেই সমস্ত ছবিই করি যেগুলো আমাকে ছুঁতে পারে এবং প্রভাবিত করে। যদিও ব্যবসার দিক থেকে ছবিগুলোর জন্য ঝুঁকি থেকেই যায় তবু প্রত্যেকবার ছবিগুলোর প্রতি মানুষের ভালবাসা আমাকে শক্তি যোগায়। গল্প বলা ও সৃজনশীলতার প্রতি আমার আস্থা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে”।
১৯৭৩ সালে ‘ইয়াদো কি বারাত’ ছবিতে আট বছর বয়সে বলিউডের রূপালি জগতে তার অভিষেক। ১৯৮৪ সালে ‘হোলি’ ছবিতে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর প্রথম অভিনয়। চার বছর পর ১৯৮৮-তে ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবিতে অভিনয় করে তারকা খ্যাতি অর্জন। তারপর একে একে তিনি দর্শকদের উপহার দিলেন ‘জো জিতা ওয়াহি সিকান্দার’ (১৯৯২), ‘রঙ্গিলা ‘(১৯৯৫), ‘ইশক’ (১৯৯৭), ‘দিল চাহ্তা হ্যাঁয়’ (২০০১), ‘লগান’ (২০০১), ‘তারে জমিন পার; (২০০৭), ‘থ্রি ইডিয়টস’ (২০০৯) ইত্যাদি আরো কালজয়ী সিনেমা।
চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার এবং মনোনয়ন অর্জন করেছেন, এবং ভারত সরকার থেকে ২০০৩ সালে পদ্মশ্রী এবং ২০১০ সালে পদ্মভূষণ পদকে সম্মানিত করা হয় তাকে। তাঁর রয়েছে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি। মি: পারফেকশনিষ্ট হিসেবে পরিচিতি। বলিউডের চকলেট বয়। তিনি আমির খান। বলিউডের স্টেরিও টাইপ, নির্দিষ্ট রোমান্টিসিজম, কিংবা এ্যাকশনের মধ্যে নিজেকে আটকে রাখেননি তিনি। ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে ভিন্নধর্মী সিনেমায় অভিনয় করাই তাঁর প্রধান পছন্দ। নিজেকে বার বার ভাঙা গড়া তার নেশা। সিনেমায় প্রযোজনা ও পরিবেশনাতেও একজন সিদ্ধ হস্ত ব্যবসায়ী বলা যায় তাকে।
ছেলেবেলায় স্কুলের বেতন পরিশোধ না থাকায় প্রায়ই আমির সহ তাঁর ভাই বোনদের দাঁড় করিয়ে শাস্তি পেতে হয়েছে। স্কুলের গন্ডি পার হতে না হতেই ছাড়তে হয়েছিল লেখাপড়া। জীবনে কোনদিনই অভিনেতা হতে চাননি। চেয়েছিলেন ভালো কোন চাকুরী করবেন। কিন্তু লেখাপড়ার জায়গাটা ছুটে গেলে সে পথটাও বন্ধ হয়ে যায়।
পুরো নাম আমি হোসেন খান। জন্ম হয়েছিল ১৯৬৫ সালে। বান্দ্রাতে। বাবা তাহির হোসেন খান ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক। আমিরের মা জিনাত হোসেন খান একজন গৃহিনী। আফগানিস্তান থেকে এসেছিলেন আমিরের পূর্ব পুরুষেরা। ভারতের বিখ্যাত পরিচালক, প্রযোজক নাসির হোসেন এই একই পরিবারের সন্তান। তাঁর মায়ের দিক থেকে আবুল কালাম আজাদ তাদের পূর্ব পুরুষদের একজন।
তরুণ আমির খানের লেখাপড়ার চেয়ে খেলাধুলায় আগ্রহ ছিল বেশি। হতে চেয়েছিলেন টেনিস খেলোয়াড়। মহারাষ্ট্র থেকে হয়েছিলেন স্টেট চ্যাম্পিয়ন। নিদারুন আর্থিক কষ্টের মধ্যেই কেটেছে আমির খানের বাল্যকাল। আমি নিশ্চিত এই লাইনটি পড়ে আপনি বিস্মিত হয়েছেন। যার বাবা একজন পরিচালক তার কেন আর্থিক সমস্যায় পড়তে হবে ভাবছেন! আমিরের বাবা পরিচালক ছিলেন ঠিকই কিন্তু ব্যবসায়িক দিক থেকে ছিলেন ঋণগ্রস্থ মানুষ। যে কারনেই শৈশবের আমির খানের জীবন অনেক না পাওয়ার কষ্টে জর্জড়িত। চোখের সামনে প্রিয় বাবা মানুষটির হেরে যাওয়া দেখতে দেখতে কলেজের লেখা পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন আমির খান। কি করবেন, কোথায় যাবেন নিশ্চিত করতে পারছিলেন না তিনি। কিন্তু একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তখনই, আর যাই করবেন সিনেমায় বা অভিনয়ে আসবেন না কখনোই। কিন্তু বাল্যবন্ধু আদিত্য ভট্টাচার্যের চাপে চলচ্চিত্রে পা বাড়ান আমির খান। আদিত্যের পরিবারটিও ছিল চলচ্চিত্রে সংযুক্ত পরিবার। কালজয়ী পরিচালক বিমল রায়ের নাতি আদিত্যের মাথায় সিনেমার পাগলামি ছিল ছেলে বেলা থেকেই। পুরান ঢাকার এই পরিচালকের গল্প শুনে শুনে বড় হওয়া আদিত্য ছেলে বেলাতেই ভালোবেসে ফেলেন রুপালী পর্দার দুনিয়াটিকে। নাছোড়বান্দা আদিত্য ভট্টাচার্যের চলচ্চিত্রে অনিচ্ছা সত্বেও কাজ করতে হয়েছিল আমির খানকে।
আমিরের বাবা মায়ের ঘোর আপত্তির জন্য ছবিটির স্যুটিং হয়েছিল গোপনে। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর শাবানা আজমির ব্যাপক প্রশংসা পায়। শাবানা আজমি নিজে গিয়ে বোঝানোর দায়িত্ব নেন আমিরের পরিবারকে। সক্ষম হয়েছিলেন শাবানা আজমী। চল্লিশ মিনিটের সেই সিনেমার নাম ছিল প্যারানয়া। একটি নির্বাক চলচ্চিত্র। প্রকাশ্যে এলেন আমির খান। ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায় প্যারানয়া।
আমির নিজের ভেতর থেকে শক্তি পান। যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তার উপর ভর করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন। থিয়েটারে যুক্ত হলেন। থিয়েটারকে অভিনয় শেখার জায়গা মনে করে এক বছর যাবৎ শুধুই মঞ্চে অভিনয় করেছিলেন তিনি। কথায় আছে লেগে থাকলে সুযোগ আসবেই। হলোও তাই। সুযোগ এলো ফিল্মে কাজ করার। না না অভিনয়ে নয়। ক্যামেরার পেছনের মানুষ হিসেবে। চাচা নাসির হোসেনের সহকারি হিসেবে ক্যামেরা পেছনে দাঁড়িয়ে সিনেমার কাজ গুলো শিখতে শুরু করেন তিনি। ক্যামেরার পেছনের সেই সময়টিতে বেশ কিছু প্রামান্যচিত্রে কাজ করার সুযোগ হয় আমিরের। সৌভাগ্যক্রমে আমির অভিনীত সেসব প্রামান্যচিত্র নজর কাড়ে পরিচালক কেতন মেহতার। ভীষন ভালো লেগে যায় তাঁর। সুযোগ দিলেন আমির খানকে তাঁর হোলি সিনেমায় ছোট্ট একটি দৃশ্যে কাজ করার। এভাবে ছোট ছোট কাজ করতে থাকেন তিনি।
কিন্তু পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্র ধরা দিচ্ছিলো না আমিরের নাগালে। আবার আবির্ভাব ঘটে আমিরের বাল্য বন্ধু আদিত্যর। তবে এবার পূর্ণ দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে। আদিত্য’র ‘রাখ’ (কয়লা) ছবির মাধ্যমে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হলো নায়ক হিসেবে। ব্যাপক ব্যবসা সফল হয় রাখ। এরপর সুযোগ আসে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত তাক’ সিনেমায় কাজ করার। আমির খান ও জুহি চাওলার চমৎকার অভিনয় রসায়ন বলিউড ঢালিউড সহ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রশংসিত হয় সব গুলো ক্যাটাগরিতে। এই সিনেমার পাপা ক্যাহতা হে বেটা নাম কারেগা গানের মাধ্যমে বাজিমাত করেন আমির। প্রথম ছবির পরপরই আমিরের চুক্তি হয় আরো নয়টি সিনেমার নায়ক হিসেবে। তারপর আর কখনোই পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আমির খানকে। কিন্তু বাবার ব্যর্থতার জন্য প্রায়ই স্যুটিং শেষে বা সিনেমার মুক্তির পর অনেক দিনই কাঁদতে দেখা গেছে গুণি এই শিল্পীকে। সব সময় আমির ভয় পেতেন কোন ভুলে যেন বাবার মতো ব্যর্থ না হয়ে যান এই ভেবে।
২০১৩ সালে আমির খানের শ্রেষ্ঠ অর্জন দেখা দেয় যখন টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের একশ সেরা মানুষদের তালিকায় নাম ওঠে আমির খানের। প্রচার বিমুখ এই মানুষটির ঝুলিতে অসংখ্য পুরস্কার থাকলেও কখনোই কোন পুরস্কার গ্রহণ করতে যাননি তিনি। মিডিয়া জগতের বাইরেও আমির সচল রয়েছেন সমাজের নানা হিতকর কাজের সাথে। দেশ ছাপিয়ে আমির বিশ্বের কাছে একটা রোল মডেল। চীনের মানুষের প্রথম পছন্দ গৌতম বুদ্ধের জীবনীর পর আমির খানের জীবনী। শিশুদের জন্য ইউনিসেফের বিশেষ দূত হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন এই গুণী মানুষটি।
আমির খানের ছবি মানেই ভাল ব্যবসা করবে একথা সত্যি কিন্তু ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মনের কথাই শোনেন আমির খান। তখন ব্যবসার কথা তাঁর মাথায় আসে না বলেই জানালেন মিস্টার পারফেকশনিস্ট।
৫৭ বছরের এই অভিনেতা, তার দীর্ঘ তিন দশকের লম্বা কেরিয়ারে সরফরোশ, লগান, দিল চহতা হ্যায়, রঙ দে বসন্তী, তারে জমিন পর, থ্রি ইডিয়টস, দঙ্গল, সিক্রেট সুপারস্টারের মতো ছবি করেছেন।
বলিউড তারকা আমির খান। শুধু নামেই নয়, বাস্তবেও তিনি আমিরই বটে। বিপুল সম্পত্তির অধিকারী তিনি।
প্রায় ১৪৩ কোটি টাকা বার্ষিক আয় আমিরের। রয়েছে প্রায় ১৪০০ কোটির সম্পত্তি।
এর মধ্যে বিএমডব্লিউ সিরিজের প্রায় দেড় কোটি টাকার একটি গাড়িও রয়েছে। আমিরের রয়েছে একটি রেঞ্জ রোভার গাড়িও। দাম প্রায় পৌনে দু’কোটি টাকা।বেন্টলের কন্টিনেন্টাল ফ্লাইং স্পার গাড়ি রয়েছে আমিরের। দাম প্রায় ৩ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। আমিরের বুলেটপ্রুফ রোলস রয়েস গাড়িটির দাম প্রায় ৪ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। মার্সিডিজ বেঞ্জ এস-৬০০ (কাস্টমাইজড) বুলেটপ্রুফ গাড়িটির দাম প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা।
ফারলেঙ্কোর প্রায় দু’কোটি টাকার আসবাবপত্র রয়েছে তাঁর বাড়িতে। মহারাষ্ট্রের পঞ্চগনিতে ১৫ কোটি টাকার বাংলো রয়েছে আমির খানের। উত্তরপ্রদেশের শাহাবাদে রয়েছে আমিরের পৈতৃক ভিটেবাড়ি। সব মিলিয়ে এখানেই ২২টি বাড়ির মালিক আমির।বান্দ্রায় আমিরের যে অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে, সেই ফ্রিডা অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ৬৫ কোটি টাকার চেয়েও বেশি।এ ছাড়া আমেরিকার বেভারলি হিলসে ৭৫ কোটি টাকার একটি বাংলো রয়েছে আমির খানের। সব মিলিয়ে মোট ২৫টি বাড়ির মালিক আমির খান।
শুভ জন্মদিন মি: পারফেকশনিষ্ট
লুৎফুল কবির রনিঃ লেখক, আর্টক্রিটিক