শংকর হালদার
একে একে স্টিমার এলো ঘাটে
হুড়মুড়িয়ে নামছে মানুষ-জন
ছিঁচকাঁদুনে পদ্মা তো নয় মোটে
বুক কাঁপানো মেঘের সে গর্জন !
লণ্ঠন আর কেরোসিনের আলোয়
জোনাক জ্বলা নদীর মেঠো বাট
শুনছো ও ভাই মন্দ এবং ভালোয়
প্রাণের আলোয় থাকতো জেগে গোয়ালন্দ ঘাট !
মেলমিস্টেম – মাসুদ – কেয়া – গাজী
ওয়েস্ট্রিজ আর ইরানী ও দুলতো
স্টিমার তো নয় মিনি জাহাজ হাঁ-জি
বাবা আম্মার সবাই যে নাম ভুলতো !
এই বাঁচি কি এই গো আমি মরি
দোদুল চালে দুলতো বুকের খাট
সেই পদ্মাই ছিলই সর্বগ্রাসী
বরফ ভাঙার শব্দ মাখা গোয়ালন্দ ঘাট !
রূপোর ইলিশ উঠতো রোজ-ই ঘাটে
তা ধরে নাও কয়েক হাজার মন
লাল পোশাকের কুলি’দের হৈ-চৈ
রেলস্টেশনের হৈ-হল্লা থাকতো সারাক্ষণ !
ভারত থেকে গঙ্গা ছুটে এসে
পদ্মা হলো বাংলার বড়-লাট
পোড়াবাজার – কুশাহাটা – উরাকান্দা ঘেঁষে
জামালপুর – চরজংশন – গোয়ালন্দ ঘাট !
পাঞ্জাব আর দিল্লী হয়ে মানুষ
কোলকাতা ও হাওড়া হয়ে কেউবা
চুয়াডাঙ্গা পোড়াদহের শেষে
মনের সুখে পার’টা হতো রবি’র কুষ্টিয়া !
বলবো কি ভাই সকাল কিংবা বিকেল
নানান পোশাক সে কি আজব ঠাঁট
দেশ বিদেশের কোন পাড়াতে যাবে
তোমার জন্য জেগে আছে গোয়ালন্দ ঘাট !
আজ এখানে চরের পরে চর
জেগে উঠলো গ্রামের পরে গ্রাম
নেই মানুষের ভিড়ের কোন পা
আমার বুকে জন্ম নিল নতুন কবরস্থান !
রূপোর ইলিশ আর আসেনা কেউ
বদল হয়ে হলুম আমি ছয় নম্বর ঘাট
দৌলতদিয়ায় নিয়ে যাচ্ছ যাও
নাম মুছো’না নামটা রেখো গোয়ালন্দ ঘাট !!