বিমল কান্তি দে
কোনো এক প্রসন্ন বিকেলে
লক্ষ মানুষের ভিড়ে,
অথবা নদীর তীরে একা একা পথ চলতে চলতে চলতে
হঠাৎ কখনো যদি দেখা হয় তোমায় আমায়
বাসের জানালা দিয়ে–নৌকো কি রিকসায়, ..
যদি, হ্যালো, কিছু বলতে না বলতেই
হাসিটুকু দেখতে না দেখতেই
কথাটুকু শুনতে না শুনতেই
ভালো আছ , জানতে না জানতেই
বাহনটা দূরে চলে যায়।
পলকা সুতোর ঘুড়ি…. সুতো ছিড়ে যেমন সে উড়ে যায়
হালকা হাওয়ায় মাথার উপর দিয়ে
একেবারে নাগালের চুল খুঁয়ে চলে যায়
কেমন লাগবে বলে মনে হবে
ভালো করে ভালো লাগা মুখটাই দেখিনি
এলো চুল? খোঁপা নাকি বেঁধেছিল বিনুনী?
চোখের কাজলরেখা আঁকা ছিল? কী জানি!
নীল শাড়ি? আসমানী বরনা?
সাটিনের জামা ছিল ,পরেছিল ওড়না?
গলায় মুক্তোর মালা ছিল নাকি, সরু হার ?
সরু আঙুলের সেই আংটিটা? দেখিনি। কীজানি!
কী এমন কাজ ছিল, কেন চলে গেল?
নির্জন সন্ধ্যায় দে একা একা বসে আমি ভাবছি
সুখস্মৃতিময় সেই সোনালি অতীত
যেন দমকা বাতাসে উড়ে গেল
প্রতিবেশী বালকের রঙীন পলকা ঘুড়ি
এটুকুই সত্য শুধু, বাকী সব কল্পনা-বিলাস।
হায়রে জীবন, কেমন কল্পনা তুই কেমন বাস্তব।
চেয়ে থাকি অপলক দূর নীলিমায়
আজ আর কিছু ভাল লাগেনা
দেখা হয়েছিল তবু কেন দেখা হলোলা?
চোখে কোন দৃশ্যের ছবি নেই
মনে কোন ভাবনার শেষ নেই
কানে কোন শব্দের ধ্বনি নেই
বর্ণহীন শব্দহীন মগ্নচৈতন্যে আমি দুবে আছি
স্মৃতির পদ্মায়, -ঢেউ জাগে ঝিরিঝিরি বাতাসে
পলকা সুতোর ঘুড়ি উড়ে যায়****
১৯৯২ আগস্ট