মাহমুদুর রহমান মনা : সাংবাদিক স্ত্রী: গতকাল বিকেলে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে এক নারীর কোলে মাথা রেখে তোমাকে বাদাম চিবুতি দেখা গেছে। এই সময় ওই নারী কোন আইসক্রিম খাচ্ছিল। পরে একদল স্থানীয় ‘সন্ত্রাসী’ চাঁদার দাবিতে তোমাদের ওপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থলে থাকা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রাজনীতিক স্বামী: মিথ্যা, ঘোড়ার ডিমের মতো ডাহা মিথ্যা কথা।
স্ত্রী: একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে তুমি ওই নারীকে নিয়ে চন্দ্রিমা উদ্যানে যাও। সেখানে লেকের ধারে ওই নারীর কোলে মাথা রেখে তুমি শুয়ে থেকে তিন কোয়া বাদাম খাচ্ছিল। সেটা টিভির HD চ্যানেলের মতো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং ঝকঝকে সেই দৃশ্য দেখা যায়।
স্বামী: ষড়যন্ত্র, গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার আমি। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
স্ত্রী: নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ওই নারীর কয়েক প্রতিবেশি জানায়, সপ্তাহে দুই দিন তুমি ওই নারীর বাড়িতে যাও। সেখানে দীর্ঘ সময় থাকার পর বের হয়ে আসো। যা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
স্বামী: আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার প্রতিপক্ষরা আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মিথ্যা এ কাহিনীর প্রতিবাদে প্রয়োজনে লাগাতার অবরোধ- হরতাল দিয়ে দেশ অচল করে দেওয়া হবে। দেশবাসী এ কাহিনী কোনোদিন বিশ্বাস করবে না।
স্ত্রী: আমার বন্ধু সন্ধানী রহমান তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ‘ইয়ে ভাইয়ের চরিত্র ফুলের মত পবিত্র’ প্রসঙ্গটা উঠে এসেছিল। তখন তুমি প্রতিবাদ করলেও কর্তৃপক্ষ তা প্রকাশ করেনি। কেননা তাদের হাতে যথেষ্ট প্রমাণ ছিল।
স্বামী: আমি শতভাগ নির্দোষ। এ সব ঘটনা তদন্তে আমি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করছি। পাশাপাশি বলতে চাই দেশে কি পুলিশ নেই। তারা এসব ঘটনার প্রতিকার করল না কেন?
স্ত্রী: ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রহমত আলী এ ‘লীলাখেলা’র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বি:দ্র: এরপর কী হতে পারে তা সম্মানিত পাঠকগণ, আপনারা নিজে লেখে নিজেদের মধ্যে ধারণ করে উপসংহার টানবেন।
(অণুরম্য গল্প ‘দেবুদার আত্মাহুতি’ বইয়ের একটি গল্প)