করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ থাকার পর আগামী ১৯ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে সব ধরনের গণপরিবহন চালু হচ্ছে। গতকাল থেকে সক্ষমতার শতভাগ যাত্রী নিয়ে অর্ধেক গণপরিবহন চললেও সব গণপরিবহন চলবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই তথ্য জান যায়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সড়ক নৌ ও রেলপথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। পর্যটন, বিনোদন ও কমিউনিটি সেন্টারে আসন সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করা যাবে।
প্রজ্ঞাপনের আরও উল্লেখ করা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত গত ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা, সামাজিক অবস্থা ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হয়, সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। যেকোনও প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অবহেলা করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ২৬ মার্চ গণছুটি ঘোষণা করে সরকার। করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় মিল-কলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ধাপে ধাপে ছুটি বাড়ানো হয়।
দেশে গত ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইস শনাক্তের ২৬ মার্চ গণছুটি ঘোষণা করে সরকার। এর পর দফায় দফায় বিধিনিষেধের জন্য বন্ধ হয় মিল-কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন। দীর্ঘ এ ছুটিতে পড়ে অর্থনীতির চাকা স্থবির হয়ে পড়ে। বিপন্ন হয়ে পড়ে দিনমজুর ও দরিদ্র মানুষের জীবন-জীবিকা। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে গত বছরের ৩১ মার্চ ছুটি আংশিক প্রত্যাহার করে সরকার। পরে আরোপিত বিধিনিষেধ ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শনাক্তের হার তিন শতাংশের নিচে নামে। এর মধ্যেই যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার করোনাভাইরাসের ধরন ছড়াতে শুরু করে। গত মার্চের প্রথম থেকেই সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করে। যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি ভারতীয় ডেলটা ধরনও সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে। পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নেয়।
এর প্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। ধাপে ধাপে তা বাড়ানো হয়। ঈদ-ঊল-আজহা উপলক্ষে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আবারও ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়। ৫ আগস্ট থেকে তা আরও পাঁচ দিন বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়। গতকাল বুধবার থেকে বিধিনিষেধ শিথিল করে সবকিছু খুলে দেওয়া হয়।
দ্যএডিটর৩৬৫/ জেডআই