ডেস্ক রিপোর্ট : ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন ব্যাটিং করতে নেমে মহাবিপদে পড়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতায় ১৩৩ রান তুলতেই দিন শেষে ৮ উইকেট হারিয়েছে টাইগাররা। ২ উইকেট হাতে নিয়ে এখনও ২৭১ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪০৪ রান সংগ্রহ করে সফরকারী ভারতীয় ক্রিকেট দল।
সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৬ উইকেটে ২৭৮ রান করেছিলো ভারত। ৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার।
দ্বিতীয় দিনের ষষ্ঠ ওভারের এবাদতের পঞ্চম বলে ব্যক্তিগ ৮৫ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান আইয়ার।
তবে দিনের অষ্টম ওভারের শেষ বলে আইয়ারকে বোল্ড করেন বাংলাদেশ পেসার এবাদত হোসেন। তিনবার জীবন পেয়ে শেষ পর্যন্ত ১০টি চারে ১৯২ বলে ৮৬ রান করে আউট হন আইয়ার।
২৯৩ রানে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে আইয়ারের আউটের পর অষ্টম উইকেটে কুলদীপ যাদবকে নিয়ে বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন রবীচন্দ্রন অশি^ন। ১৩২ বলে ৫০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে প্রথম সেশন করেন অশি^ন-কুলদীপ। প্রথম সেশন শেষে ভারতের রান ছিল ৭ উইকেটে ৩৪৮।
বিরতির পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন অশি^ন। কুলদীপ-অশি^ন জুটি ভাঙতে বেগ পেতে হয়েছেন অধিনায়ক সাকিবকে। অবশেষে ১৩২তম ওভারে উইকেট বিলিয়ে দেন অশি^ন। মিরাজের বলে উইকেট ছেড়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন অশি^ন। ২টি করে চার-ছক্কায় ১১৩ বলে ৫৮ রান করেন তিনি । কুলদীপের সাথে অষ্টম উইকেটে ২০০ বল খেলে ৮৭ রান যোগ করেন অশি^ন। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে অষ্টম উইকেটে ভারতের এটিই সর্বোচ্চ রান।
অশি^ন ফেরার কিছুক্ষনই পরই থামেন কুলদীপও। তাকে লেগ বিফোর আউট করেন তাইজুল। ৫টি চারে ১১৪ বলে ৪০ রান করেন কুলদীপ।
শেষ ব্যাটার হিসেবে মোহাম্মদ সিরাজকে ৪ রানে থামিয়ে ভারতের ইনিংস শেষ করেন মিরাজ। অন্য প্রান্তে ২টি ছক্কায় ১৫ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন উমেশ যাদব। ৪০৪ রানে শেষ হয় ভারতের ইনিংস।
বাংলাদেশের তাইজুল ১৩৩ রানে ও মিরাজ ১১২ রানে ৪টি করে উইকেট নেন। এবাদত ৭০ ও খালেদ ৪৩ রানে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
এরপর খেলতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ভারতের পেসার সিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ঠিকঠাক খেলতে না পেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
বাংলাদেশের পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে টেস্ট ইনিংসের প্রথম বলে আউট হলেন শান্ত। এর আগে এই লজ্জার রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন হান্নান সরকার, জাভেদ ওমর বেলিম, নাফিস ইকবাল ও তামিম ইকবাল।
তিন নম্বরে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন ইয়াসির আলিও। ভারতীয় পেসার উমেশ যাদবের বলে বোল্ড হন ৪ রান করা ইয়াসির। ফলে ৫ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
চার নম্বরে নেমে দারুন ছন্দে ইনিংস শুরু করেন লিটন দাস। ৫টি বাউন্ডারি হাকান তিনি। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা আরেক ওপেনার জাকির হাসানকে নিয়ে ৩৪ রান আসার পর লিটনকে বোল্ড করেন সিরাজ। সমাপ্তি ঘটে লিটনের ৩০ বলে ২৪ রানের ইনিংসের।
শান্ত-লিটনের পর জাকিরও শিকার হন সিরাজ।আউট হওয়ার আগে ৩টি চারে ৪৫ বলে ২০ রান করেন জাকির।
ভারতের দুই পেসার সিরাজ ও উমেশের তোপে ৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেই চাপ আরও বাড়িয়ে দেন স্পিনার কুলদীপ।
মিডল-অর্ডারে বাংলাদেশের সেরা তিন ব্যাটারসহ চার উইকেট শিকার করেন কুলদীপ। ২৫তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসে দ্বিতীয় ডেলিভারিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিবকে বিদায় করেন কুলদীপ। স্লিপে কোহলিকে ক্যাচ দিয়ে ২৫ বল খেলে ৩ রান করে আউট হন সাকিব।
দলীয় ৭৫ রানে সাকিবের বিদায়ের পর জুটি গড়েন মুশফিক ও নুরুল। দলের রান ১শর দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। তাদের পথে বাঁধা হন কুলদীপ। স্টাম্পের বল ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট লেগে গিলকে ক্যাচ দেন ৩টি চারে ১৬ রান করা নুরুল।
নুরুল না পারলেও দলের রান ১শ পার করে থামেন মুশফিক। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে না পারা মুশফিক শিকার হন কুলদীপের বলে লেগ বিফোরের। ৩টি চারে ২৮ রান করেন মুশি। ৩ বল পর কোন রান করতে না পারা তাইজুলকে বোল্ড করেন কুলদীপ।
১০২ রানে অষ্টম উইকেট পতনের পর দ্রুত গুটিয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার ছিলো বাংলাদেশের। কিন্তু নবম উইকেটে ৫৪ বল খেলে ৩১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দিন শেষ করেছেন মিরাজ ও এবাদত। মিরাজ ১৬ ও এবাদত ১৩ রানে অপরাজিত আছেন।
ভারতের কুলদীপ ৩৩ রানে ৪ উইকেট নেন। সিরাজ ১৪ রানে ৩টি শিকার করেন।
দিএডিটর৩৬৫/এমআরএম