আল মাকসুদ
দ্রৌপদীর জ্বর;
পঞ্চপাণ্ডব টুইটবার্তায় জানিয়েছেন:
‘দ্রৌপদী হ্যাজ বিন সাফারিং ফ্রম ফিভার সিনস ওইনেজডে… প্লিজ প্রে ফর হার!’
অজপাড়া গাঁয়ে থাকি;
এসবের কিছু জানি না, বুঝিও না।
পাড়ার শিক্ষিতা কৈশোরত্তীর্ণ ঝিনুকমালা জানালো, ‘ওইসবে কিছু হইবো না!’
পানিপড়া লাগবো, হুজুরের পানিপড়া;
তাইলে যদি দ্রৌপদী ভালো হয়।
চমকে ওঠার মতো কিছু বটে!
কে দেবে?
কেন শান্তনগরের পিরসাব;
শেখ বোরহানউদ্দিন, অনেক কামেল মানুষ!
আমি কবিতা-টবিতা করি,
না বুঝি টুইটার, না বুঝি পানিপড়ার কামিলিয়াতি…
ঝিনুক ছুটে চলে ভেতরে তার মুক্তোর তেজ, পানিপড়া চাই;
দ্রৌপদীর জ্বরের কথা জেনেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে…
শতধাবিভক্ত চূর্ণ কবিতার পঙক্তি
জড়ো করেও পানিপড়া বানানোর সাধ্য আমার নেই;
কী নিষ্ঠুর ব্যর্থতা!
পঞ্চপাণ্ডব কি টুইট করেই খালাস!
বিস্ময়কর!
ঝিনুকের কী দায়?
দ্রৌপদী বিশেষ কেউ বলে?
আমি কেন বলতে পারিনি?
‘এই নাও প্রেসক্রিপশন, দু’পঙক্তির কবিতা লেখে।’
এখানেই আছে লেবু ও আদা চা’র সৌরভ।
চা-পাতার গৌরবে অধিষ্ঠিত একটি নিটোল দাওয়াইপত্র!
ঝিনুকের ব্যস্ততা পানিপড়ার গমগমে আধ্যাত্মিকতায় কেমন জ্বলজ্বল করে…
আমি ভুলে যাই কবিতা-ওষুধ।
পলাতকা পাখির ঠোঁটে জ্বরের চিহ্ন—
প্রতিদিনের উঠোন, এই লেবুতলা, কুয়োপাড়, আমার নিত্যসাথি এঁদো ডোবা সবাই কেমন জ্বরে কাঁপছে…
শহরের বস্তিতে, কিংবা ওই ভদ্রপাড়ায় সেখানেও কি দ্রৌপদীর জ্বর সংক্রামিত হলো?
আমার কবিতা স্বার্থান্ধ, নিছক শব্দের কারসাজি; জ্বর ভালো করার ব্যবস্থাপত্র দিতে অক্ষম!
সেলাই করা হৃদয় পানপাতার মতো কেবল করে হাঁস-ফাঁস;
দিগন্তের উলুখাগড়া জীবন দ্রৌপদীর জ্বরের চিহ্ন দিতে চায় মুছে তবুও আকুল নিঃশ্বাসে…
[পুনশ্চ: পঞ্চপাণ্ডব এখন আলেকজান্দ্রিয়ায় তাঁদের নিয়ে নির্মিত একটি মুভির প্রিমিয়ার শো উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমাণ;
মিশরীয় অতিথি-পিরামিড! ]