রাহনুমা খানের কবিতা
পকেটে কিছু খুচরো
বিষন্নতা নিয়ে বসে আছি
বহুদিন
ভেবেছিলাম তা দিয়ে
কিনবো হিজল ফোঁটা
অথবা সূর্যাস্তের
সোনাগলা আলো
কিন্তু তারা কেউই আমার
এই খুচরো বিষন্নতার
কাছে বিকোতে চাইলনা
সেই থেকে খুচরো
বিষন্নতার ঝনঝন শব্দে
কাটাচ্ছি দিন-রাত ।
একবার এক কৃষ্ণচূড়ার
কাছে গিয়ে দর-দাম
করার চেষ্টা করেছিলাম
অমন আগুনরঙা হয়েও
সে কিছুটা আগুন ও
আমাকে দিতে চাইলনা
রক্তচন্দনের কাছেও
একদিন আকুতি করেছিলাম
বিষন্নতা বিনিময়ের
হাজারো রক্তরাঙা বীজের
মাঝেও সামান্য বিষন্নতা
মিশাতে সে নারাজ
চিত্রা নদীর কাছে
ভেবেছিলাম এবার নিশ্চই
বিষন্নতাগুলো জলে
ভাসাতে পারবো
কিন্তু খিলখিল হাসির
সাথে নদীর জল
বিষন্নতাকে সঙ্গী করতে
চাইল না
এরপর গেলাম চর্তুদশী
চাঁদের কাছে
বিষন্নতাগুলো দিয়ে কিছু
জোছনা কিনতে
কিন্তু সেও জোছনার
আলোতে বিষন্নতা
মাখাতে রাজী না হয়ে
ফিরিয়ে দিল আমায়
সেই থেকে পকেটে
খুচরো বিষন্নতাগুলো
নিয়ে বসে রয়েছি
জোছনা, নদী, ফুল
কেউই বিষন্নতাগুলোর
বিনিময়ে কিছু দিতে
রাজী হলোনা
বিষন্নতার বোধহয় কোন
বিনিময় মূল্য নেই,
জমতে জমতে পাহাড়
হয়ে যায়
আর সেই পাহাড়ের বুক
থেকে জমানো
বিষন্নতাগুলো ঝরনা হয়ে
নেমে আসে
পকেটে কিছু খুচরো
বিষন্নতা রাখা ভালো
তাহলে
কোন একদিন একটা
গোটা ঝরনা হয়তো
কিনে ফেলতে পারবো