একটি নরম স্বর্নলতা বাঁচতে চেয়েছিল
সোনালী উজ্জ্বল মসৃন তাজা একটি স্বর্নলতা
জীবনের কোন একটি শুভ মাহেন্দ্রক্ষনে কোন একটি মহীরুহের সাথে দেখা হয়েছিল
সেই স্বর্নলতাটির।
হ্যা, দেখা হওয়াটা ভবিতব্য ছিল তার।
সময়টা ছিল ফাগুনের হুহু করা বিরহ বাতাসে ভরপুর
অপূর্ব সুর মুর্চ্ছনায় চারিদিকে তারুন্য এর উচ্ছ্বসিত প্রানের স্পন্দন।
অপূর্ব সেই মহীরুহ বৃক্ষ,আহা!!
দুচোখ বন্ধ করলে আজ ও ভেসে উঠে
স্বর্নলতা দেখতে পায় তাকে
অবিকল সেই আগের রূপে।
যদিও মাঝখানে পেরিয়ে গেছে গুনে গুনে জীবনের পঁচিশটি বসন্ত
অথচ এতটুকু মলিনতার ছাপ পড়েনি কোথাও।
সেই তরুনী কোমল স্বর্নলতাটির মনটা জয় করতে মহীরুহ এর বুঝি বা সময় লেগেছিল ন্যানোসেকেন্ডের ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কিছু মুহুর্ত মাত্র।
হে মহীরুহ, হে আমার প্রানের স্পন্দন মহীরুহ
তোমার স্বর্নলতা তোমাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিল।
তোমাকে জড়িয়ে পড়িয়ে, আবেগে, ভালোবাসায়,,
তোমার অকৃত্রিম প্রানের ছোয়ায়, বাঁচতে চেয়েছিল।
তোমার পানে, শুধুমাত্র তোমার ওই চোখ দুটি র দিকে নিনির্মেষে তাকিয়ে কাটিয়ে দিতে চেয়েছিল তার একটি মাত্র আস্ত জীবন।।
স্বর্নলতা, তুমি তো পরগাছা হয়ে তার জীবনে বাচতে চাওনি,
তুমি তো তোমার মহীরুহ কে গভীর মমতায় আগলে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলে।
তার অপুর্ব সুর-মুর্ছনায় নিজেকে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিলে, তার স্বপ্নের মাঝে,
তার জীবনের দুখ কষ্ট গুলো শুষে নিতে চেয়েছিলে গভীর আবেগে,
আর তাকে ভাসিয়ে নিতে চেয়েছিলে নিষ্পাপ আকন্ঠ ভালোবাসায়।
কেন তুমি তার আশ্রয় পেলে না স্বর্নলতা!
এক জীবনে কতটা অবহেলা পেলে,
একজীবনে কতটা নিস্পৃহতা র মুখোমুখি হলে,
এক জীবনে কতটুকু একতরফা ভাবে ভালোবাসতে বাসতে
ক্লান্ত হলে মানুষ
একজন “পরিনত মানুষ ” হয়,,
বলতে পার স্বর্নলতা?
স্বর্নলতা, অনেক তো হল,
এবার তোমার সময় হয়েছে উঠে দাড়ানোর, ঘুরে দাড়ানোর,
স্বর্নলতা হয়ে মহীরুহ কে আঁকড়ে ধরে বাচার চেস্টা করতে করতে তুমি যে আজ নিজেই এক মহীরুহ হয়ে গেছ,,
তুমি কি তা বুঝতে পার?
বিধাতা তো তোমায় আজ দুহাত ভরে ঢেলে সাজিয়ে দিয়েছেন জীবন, হে স্বর্নলতা।
তুমি আজ ফুলে ফলে ঝুকে পড়া এক পরিপূর্ণ পরিপক্ক বৃক্ষ।
তবে মনটি কিন্তু তোমার সেই আগের মতই, কোমল, নরম, আকর্ষণীয়।
মনটা কে কখনো বদলে ফেল না, স্বর্নলতা।
একদিন, মহীরুহ তোমার কাছে ফিরে আসবে, ফিরে তাকে আসতেই হবে,
কারন তোমার মত আশ্রয় বা ঠাই, এই জীবনে কোথাও তার মিলবে না।
স্বর্নলতার মত ঠিক এমন ভাবে কেউ তাকে ভালোবাসায় ভরাবে না প্রতিনিয়ত।
কেউ তাকে এত নিপুন যত্নে লালন করবে না কোনো দিন,,
তাই তাকে ফিরে আসতেই হবে,
স্বর্নলতার কাছে কোনো একদিন।
আর না হলেও স্বর্নলতার আজ আর তাতে কি বা যায় আসে!
সে তো আজ পেয়েছে তার অনেক অনেক আকাংখিত স্বপ্নময় স্বর্গের দেবতা কে।।
যে দেবতা তাকে আশ্বস্ত করে, নির্ভরতা দেয়,
” আমার প্রিয় স্বর্নলতা,তুমি কিচ্ছুটি ভেবো না,,
তুমি যে আমার জীবনের বহু প্রতিক্ষিত শ্বেত শুভ্র পদ্মপুকুর,
যে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আমি
খর রৌদ্রের তৃষ্ণা মেটাই।
আমি তোমাকে আজীবনের জন্য ভাগ দিব,
আমার আলো, বাতাস, আবেগ আর আমার প্রিয় প্রিথিবি।
তুমি যুগ যুগ ধরে বেচে থাকো, ঠিক এমন করে, এভাবেই, স্বমহিমায় উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের দীপ্তি নিয়ে,, কখনো এতটুকু ম্লান হয়ে যেও না,,
তুমি বেঁচে থাকো আমার মনের আজন্ম লালিত আদরের লতাটি হয়ে,,
আমাকে ঘিরে,
নিস্পাপ ভালোবাসায়।”