মাসকাওয়াথ আহসানের স্যাটায়ার
স্বদেশীরা একবার শান্তি নিকেতনে আসে, দেশপ্রেমের চাঁদা চাইতে।
রবিদা চাঁদা দিতে না চাইলে, ঠিকুজি বিশেষজ্ঞ বলদা রায় বলে, শুনেছি ওকাম্পো নামের এক ভূকম্পন রবিগৃহে ঘটে, ইনুর সংগে তিনুর কীসের সম্পর্ক!
অমনি স্বদেশীদের ইতিহাসান বলে, রবিদা বৃটিশের লোক! তার বেডরুমের খবর কইয়া দিমু।
খাসিব বরণ পাল বলে, কাদম্বিনী বৌদির হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।
স্বদেশীদের ক্রিপি গ্যাং শান্তিনিকেতনে গালাগালিভার্স ট্রাভেলস শুরু করলে, কবিগুরু গান্ধীজীকে ফোন করেন, ভিক্ষে চাইনে বাপু পার্টির সারমেয় সামলাও।
বাপু ছাগল নিয়ে শান্তি নিকেতনে আসেন। নিজেকে গরীব দেখাতে প্রায় শ খানেক ফুট সোলজার নিয়ে ট্রেনের থার্ডক্লাসে করে এসেছেন গান্ধী।
তিনি আরাম কেদারায় শুয়ে ছাগলটিকে কিসমিস খাওয়াতে অনুরোধ করেন। ঘন্টা খানেক পরে ছাগলের দুধ পান করে তারপর বলেন, বুঝলে ঠাকুর, দেশপ্রেম করতে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হয়। বাংগালি স্বদেশিগুলো তাই গালি দিয়ে চাঁদা তুলেছে।
গান্ধীজী এরপর ওকাম্পোকে বলেন, মাদাম আপনি আমাদের লিবেরেশান মুভমেন্টের মক্ষীরাণী হয়ে যান। আমাদের দেশপ্রেমেও মিউজ লাগে।
ওকাম্পো বাংগালি বিমলাদের মতো সরলা নয়, তাই বলে, বাপু আপনার তো দাঁতই নেই, কী করে প্রেমের চুম্বন দেবেন।
বাপু রবিদাকে অনুরোধ করেন, কলিকাতা নিয়ে গিয়ে তার দাঁত বাঁধিয়ে দিতে। বাপুর দাঁত বাঁধিয়ে দেয়া মানেই দেশের কাজ।
কবিগুরু উপন্যাস লিখতে বসে যান, ঘরে বাইরে।
কলিকাতার প্রকাশককে অনুরোধ করেন, গান্ধীজীর দাঁত বাঁধিয়ে দিয়ে দেশপ্রেমের ভাষণের উপযুক্ত করে দেবার জন্য।
নতুন দাঁত নিয়ে ভাষণ দিয়ে কলিকাতা মাত করে দেন বাপু। এরপর লেডি মাউন্ট ব্যাডেনের সংগে দেখা করতে গিয়ে ছাগলের দুধের পায়েসের বাটি উপহার দিয়ে বলেন, আমার দাঁত নেহেরুর দাঁতের চেয়ে সুন্দর তাই না মাদাম, এসবই ছাগলের দুধের ম্যাজিক।