ভোর হতে না হতেই কুমার নদের কম্পমান সাঁকো পাড়ি দিয়ে
পঞ্চানন ঘোষ ঘোল নিয়ে আসে– “ঘোল, হেই ঘোল” বলে–
কিংবা আমিই ছুটে যাই দুরু দুরু বুকে বাঁশের সাঁকো হেঁটে
যখন তাকে গ্লাস ভরে ঘোল দিতে বলি, ভেসে ওঠা ছানার দিকে
চলে যায় চোখ, আর পঞ্চানন একবার আমার দিকে একবার
ঘোলের দিকে তাকিয়ে ঘোল দিতে যায়
ঘোলের পাত্রের নিচে অথৈ জলের বন্যা বয়ে যায়…
আমি তাকে বলি, “এত জল কোথা থেকে আসে?”
পঞ্চানন বলে, “ছোট্টবেলায় সাঁতার কাটতাম আরো গভীর জলে”
পঞ্চাননের মুখের দিকে বিস্ময়ভরে তাকাতেই
তার চোখের মণিতে দু’তিনটে শিশুবয়সের মুখ
ভেসে উঠতে দেখি। দেখি তারা সাঁতার কাটছে
আরো অথৈ জলে
পঞ্চাননকে বলি, “তোমার পাত্র থেকে জল ছেকে
আরেক গ্লাস ঘোল দাও তো দেখি”
পঞ্চানন ঘোলের ভেতর হাত ঢুকিয়ে আমার দিকে
জলবিহীন ঘোল তুলে দেয়
আমি কী মজা কী মজা বলে চুকচুক করে ঘোল চেটে খাই
পঞ্চাননের চোখ থেকে শিশুগুলো
ঝুরঝুর করে মাটিতে পড়ে যায়