দিনের হিসাবে বলতে পারবে?
কড়ে আঙ্গুলে গুনে বলতে হবে কিন্তু…
কতদিন তোমায় দেখি না
সবুজ ঘাসে আসন গেড়ে মুখোমুখি বসি না
অপলক চোখে একে অন্যের দিকে চেয়ে থাকি না।
কতদিন রমনার সবুজ বনানীতে বুক ভরে শ্বাস নিই না
পুকুর পাড়ের শ্যাওলা ধরা পিছল ঘাটে বসি না
ঘাট পাড়ের হাস্নাহেনার গন্ধে মাতাল হই না।
কতদিন দুজনে ধান ক্ষেতের আল ধরে হাটি না
বাতাসে নুঁয়ে পড়া ধানের শীষ ছুঁয়ে দেখি না
বাতাসে হলদে-পাকা ধানের শীষের দোলে উচ্ছ্বসিত হই না।
কতদিন আমাবশ্যা রাতে বাড়ীর পেছনে বাঁশ বাগানে যাই না
জোনাক পোকা পকেটে পুরতে পেছন পেছন ছুটি না
জোনাক আলোয় দেখানো পথে তোমায় ছু্ঁয়ে দেখি না।
কতদিন পূর্ণিমার মিষ্টি আলোয় খাল পাড়ের রাস্তায় হাঁটি না
খালের জলে পুর্নিমা চাঁদের রুপালি আলোর রূপ দেখি না
শক্ত মাটির ঢালিতে বসে তোমার গান শুনি না।
কতদিন তোমাকে নিয়ে বারান্দায় বসে সুর্যোদয় দেখি না
ভোরের মিষ্টি আলো গায়ে মাখি না
ভোরের আলোয় পাখির কিচির মিচির শুনে মন জুড়াই না।
কতদিন সন্ধ্যার সুর্য ডোবার সৌন্দর্য উপভোগ করি না
জানালায় দাড়িয়ে দুজনে গোধূলীর রূপে মুগ্ধ হই না
পাখির নীড়ে ফেরা নিয়ে গল্প করি না।
কতদিন ঝুম বৃষ্টিতে ভিজি না
তোমার হাত ধরে বৃষ্টি ভেজা পথে হাঁটি না
বৃষ্টি জলে ভিজে শীত কাঁপুনিতে কেঁপে উঠি না।
কতদিন গভীর রাতের সৌন্দর্য দেখি না
রাতের নিস্তব্ধতায় নিজেকে খুঁজে ফিরি না।
রাতের তারার সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটে বেড়াই না।
কতদিন “সেই” কফি শপে আড্ডা দেই না
মুষল বৃষ্টিতে এক কাপ ক্যাপাচিনো ভাগ করে খাই না
শরীরের স্পর্শে উষ্ণতা নেই না।
কতদিন টং ঘরের ভাঙা বেঞ্চিতে দূজনে পাশাপাশি বসি না
আধভাঙা গ্লাসে জিহবা পুড়িয়ে চা খাই না
চায়ে চুমুক দিতে দিতে খুনসুটিতে মাতি না।
অথচ এই শহরেই তোমার বাস
আমারও বসবাস এই শহরেই
তারপরও পথের দূরত্বে আমরা পরবাস!
তবুও দেখ কতদূর, কতদিন দেখা নাই। কথা নেই দুজনে…