ফারহানা শিকদার
এই দেখ,এখনও বেঁচে আছি!
এবারের ফাগুনেও টুপটাপ ঝরে পড়া
পলাশ শিমুল ছুঁয়ে গেছে নীরবে।
চৈতালি বাতাসে নেচে ক্লান্ত ভাঁটেরা
ছড়িয়ে দিয়েছে যে সুবাস,
আমি তার ঘ্রাণ ভরেছি বুকের বাক্সে
অনাগত রাতে সে গন্ধ বার বার
বহুবার মেখে নিয়ে ছুটে যাব পাহাড়ে সমুদ্রে ;
সেখানে বুনো বাতাস আর বালিয়াড়ির
ভাঁজে লুকিয়ে থাকবে সব দুঃখ।
সাগর লতায় জড়ানো সুখে
সুর নিয়ে খেলা করা বালুর গান বেজে যাবে
আমার নাম না জানা আগন্তুকের বুকে।
আমি এক উপন্যাসে লেখা ফেরারী চিঠি
বোশেখের ঝড়ে হারানো ঠিকানা খুঁজি।
ভালোবাসার কথা বয়ে বেড়ানোর কষ্টে
কাগজের রঙ বদলে হয়েছে ধূসর,
কি জানি কি এক মায়ায় বেঁধে রাখা ঘর
পরিচয় বলে দেয়!
সেখানে অপমানগুলো আবেগে মিশে
দীর্ঘজীবি হয়ে ওঠে।
তাই দেখ,বেঁচে আছি!
লাল নীল শাড়িতে বেঁধেছি সুখ
বিরাণ বুকে বুনেছি ছোট ছোট স্বপ্ন বীজ
দুচোখের নোনা জলে করি আবাদ
একদিন ঠিক মহীরুহ হয়ে ওঠবে হয়ত!
অপেক্ষা… অপেক্ষা…. অপেক্ষা…
আমার সেদিনের জন্য অপেক্ষা,
ব্যস্ত দিনেরা ছুটিতে চলে গিয়ে
ব্যস্ত রাতেরা ছুটিতে চলে গিয়ে
আমায় দিয়ে যায় এক বিশাল অপেক্ষা।
আমি বয়ে বেড়াই তাকে ;
যত্নে পুষে রাখি।
অপেক্ষার অভ্যাসে হাঁপিয়ে ওঠা মন
খুঁজে ফিরে স্মৃতির সোনালী সময়
সে এক কেচ্ছা কাহিনীর মত মিশে রয়
ঠাকুরমার ঝুলিতে।
প্রকৃতির পরিবর্তনে বলে যাওয়া সময়ের কথা
নির্বাক আমি শুধু শুনে যাই
আর চেয়ে চেয়ে নিজেকে জানাই
এখনও বেঁচে আছি।