তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন বলেছেন, ‘তালেবান আমলে আফগানিস্তানে নারীদের জন্য বোরকা পরা বাধ্যতামূলক নয়। বাইরে বের হওয়ার সময় তাঁদের হিজাব পরলেই চলবে। এছাড়া নারীরা এবার তালেবান শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবেন।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন। তিনি কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবান দফতরের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সুহাইল শাহিন জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে আছে এমন এলাকাগুলোতে হাজারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালু আছে। সেখানে নারীরা লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। নারী শিক্ষার বিষয়ে তালেবানের ইতিবাচক নীতির কথা এর আগে মস্কো ও দোহা সম্মেলনেও বলেছি। তবে বোরকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারীরা মাথায় হিজাব পরেছেন কি না সেটা পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে পুরো শরীর ঢাকা বোরকা পরতেই হবে এমন নয়।
তালেবান শাসনামলে (১৯৯৬ থেকে ২০০১) আফগান নারীদের জন্য বোরকা পরা বাধ্যতামূলক ছিল। ওইসময় দেশটির নারীদের চাকরি করা নিষিদ্ধ ছিল। এমনকি পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীরা ভ্রমণে যেতে পারতেন না। ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের পড়াশোনার অনুমতি ছিল না।
এসব কারণে আফগানিস্তানে তালেবানের পুনরুত্থানে নারীদের মধ্যে ভীতি বেড়েছে। তবে সুহাইল শাহিন বলেন, ‘পুরো শরীর ঢাকা বোরকা নয়, বোরকা আর হিজাব একই জিনিস নয়, নারীরা মাথায় হিজাব পরেছেন কিনা সেটা পর্যবেক্ষণ করা হবে।’
নারী শিক্ষার বিষয়ে সুহাইল শাহিন বলেন, ‘তালেবান শাসনামলে এবার মেয়েরা প্রাথমিক থেকে উচ্চস্তর পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। এর অর্থ, নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করার সুযোগ থাকবে।’
তবে মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) ‘এই তালেবান ২০ বছর আগের তালেবান নয়’ বলে উল্লেখ করেছেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ।
এদিকে তালেবান তাদের সরকারে নারীদের যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছে। বাহিনীটির সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য ইনামুল্লাহ সামানগানি এ আহ্বান জানান। সামানগানি বলেন, ‘ইসলামিক আমিরাত নারীরা ক্ষতির শিকার হোক, তা চায় না। শরিয়াহ আইন অনুযায়ী সরকারে তাঁদের উপস্থিতি থাকা উচিত। এখনো সরকারের কাঠামো পুরোপুরি পরিষ্কার নয়, কিন্তু অভিজ্ঞতার আলোকে মনে হচ্ছে, এখানে পুরোপুরি ইসলামিক নেতৃত্ব থাকবে। এতে সব পক্ষেরই যোগ দেওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের বিভিন্ন পন্থা, নিয়ম-কানুন আছে। অন্যদের মতো আমাদেরও (আফগানদের) মূল্যবোধ অনুযায়ী নিজস্ব নিয়ম-কানুন থাকার অধিকার রয়েছে। আমরা শরিয়াহ আইনের অধীনে নারীদের অধিকারের প্রতি সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ। নারী অধিকার প্রসঙ্গে তালেবানের নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, নারীরা আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে যাচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে, নারী-পুরুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না।
সামানগানি বলেন, শরিয়াহ আইন অনুযায়ী সরকারে নারীদের উপস্থিতি থাকা উচিত। এখনও সরকারের কাঠামো পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। তবে পুরোপুরি ইসলামিক নেতৃত্ব থাকবে। এতে সব পক্ষেরই যোগ দেওয়া উচিত।
দ্যএডিটর৩৬৫/ জেডআই
