বহুল প্রতীক্ষিত বগুড়া থেকে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণের উদ্দেশ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, বিস্তারিত নকশা তৈরি, টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং নির্মাণ তদারকি কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে কনসালটেন্সি সার্ভিসের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং ভারতীয় কনসালটেন্সি সার্ভিস রাইটস এবং আরভি অ্যাসোসিয়েটস আর্কিটেক্টস ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড কনসালটেন্টস প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা এবং কনসালটেন্সি সার্ভিসের পক্ষে ভারতের রাইটসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় আগারওয়াল।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এ লাইনটি তৈরি উত্তরাঞ্চলের দীর্ঘদিনের দাবি। নতুন এ রেল লাইনের মাধ্যমে সমগ্র উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে, সময় কমে যাবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার রেল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে । বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থা যমুনা সেতু দ্বারা বিভক্ত। পশ্চিমাঞ্চলে মিটার গেজ লাইন এবং পূর্বাঞ্চলে ব্রডগেজ লাইন। বর্তমান সরকার সারাদেশকে একই ভাবে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য পর্যায়ক্রমে ডাবল লাইন করা হচ্ছে ।
তিনি বলেন, সরকার অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে, পুরনো লাইন সংস্কারসহ নতুন নতুন লাইন নির্মিত হচ্ছে এবং ডুয়েলগেজ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়েতে ভারতের বিভিন্ন সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তিনটি এলওসির মাধ্যমে ভারত সরকার রেলওয়েতে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির ক্ষেত্রে ভারত অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী।
এ সময় ভারতীয় অর্থায়নে নির্মিত কয়েকটি প্রকল্পের নাম উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত নতুন লাইন নির্মাণ, ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন নির্মাণ, টঙ্গী-জয়দেবপুর ডাবল লাইন নির্মাণ, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া নতুন রেলপথ নির্মাণ, পার্বতীপুর- কাউনিয়া পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ, খুলনা- দর্শনা, কুলাউড়া-শাহবাজপুর নতুন রেলপথ নির্মাণ, সৈয়দপুর কারখানার আধুনিকায়ন প্রকল্প ভারতীয় অর্থায়নে হচ্ছে। এছাড়া ভারত আমাদের ক্যাটারিং সার্ভিসের উন্নয়নসহ ট্রেনিং ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, ভারতের সাথে আমাদের কয়েকটি রেল কানেক্টিভিটি গড়ে উঠেছে । বর্তমানে ভারতের সাথে মৈত্রী, বন্ধন এবং মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসা এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেলযোগাযোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ভারতের উপহার দেয়া দশটি লোকোমোটিভের জন্য ভারত সরকারকে মন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত নতুন লাইন নির্মিত হলে রেল যাত্রা ১১২ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। এটি ৮৬ কিলোমিটার মেইন লাইন এবং ১৬ কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মিত হবে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। আগামী ১৩ মাসের মধ্যে নিয়োগকৃত কনসালটেন্সি ফার্ম তাদের রিপোর্ট প্রদান করবে, এর পরে লাইন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করাসহ অন্যান্য কাজ শুরু হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কে দোরাইস্বামি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট কনসালটেন্সি সার্ভিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দিএডিটর৩৬৫/এমআরএম