ডেস্ক রিপোর্ট : পাকিস্তানী অফ-স্পিনার সাজিদ খানের ঘুর্ণিতে ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিন শেষেই ফলো-অনের শঙ্কায় পড়ে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফলো-অন এড়াতে আরও ২৫ রান করতে হবে টাইগারদের। হাতে আছে ৩ উইকেট।
৪ উইকেটে ৩০০ রান তুলে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংস ঘোষনা করে পাকিস্তান। এরপর ব্যাট হাতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে মহাবিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ২৬ ওভারে ৭ উইকেটে ৭৬ রান তুলেছে টাইগাররা। ৩ উইকেট হাতে নিয়ে এখনও ২২৪ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
টানা বৃষ্টির কারনে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যকার ঢাকা টেস্টের প্রথম দুই দিন খেলা হয় মাত্র ৬৩ দশমিক ৩ ওভার। এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। দু’দিন মিলিয়ে ২ উইকেটে ১৮৮ রান করেছিলো সফরকারীরা।
বৃষ্টির কারনে তৃতীয় দিন মাঠেই বল গড়ায়নি। তবে বৃষ্টি না থাকায় চতুর্থ দিনের খেলা সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে শুরু হয়।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২ উইকেটে ১৮৮ রান নিয়ে ম্যাচের চতুর্থ দিন খেলতে নামে পাকিস্তান। আজহার আলি ৫২ ও অধিনায়ক বাবর আজম ৭১ রানে দিন শুরু করেন।
আজ দিনের দশম বলে আজহারকে শিকার করেন বাংলাদেশের পেসার এবাদত হোসেন। ১৪৪ বল খেলে ৮টি চারে ৫৬ রান করেন আজহার। প্রথম দিন দলীয় ৭০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর জুটি বেঁধেছিলেন আজহার ও বাবর। তৃতীয় উইকেটে ১২৩ রান যোগ করেন তারা।
আজহারের ফেরার ১৬ বল পর, বাবরের বিদায় নিশ্চিত করেন আরেক পেসার খালেদ আহমেদ। বাবরকে ব্যক্তিগত ৭৬ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন খালেদ। দুই ম্যাচ ও তিন ইনিংস পর অবশেষে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম উইকেটের দেখা পেলেন খালেদ। ১২৬ বল খেলে ৯টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন বাবর।
দলীয় ১৯৭ রানে বাবরের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন ফাওয়াদ আলম ও উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান। পাকিস্তানের রানের চাকা সাবলীলভাবেই ঘুড়িয়েছেন তারা।
দ্বিতীয় সেশনে হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান ফাওয়াদ ও রিজওয়ান। টেস্ট ক্যারিয়ারে ফাওয়াদ দ্বিতীয় ও রিজওয়ান ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান। ৯৯তম ওভারে দলের স্কোর ৩শ হবার পরই ইনিংস ঘোষনা করে পাকিস্তান।
৯৮ দশমিক ৩ ওভারে ৪ উইকেটে ৩০০ রানে ইনিংস ঘোষনা করে পাকিস্তান। এ সময় ফাওয়াদ ৯৬ বলে ৭টি চারে ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯৪ বলে ৫৩ রান করেন রিজওয়ান।
বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ৭৩ রানে ২টি, এবাদত-খালেদ ১টি করে উইকেট নেন। ১৯ ওভার বল করে ৫২ রানে উইকেট শুন্য ছিলেন সাকিব।
পাকিস্তানের ইনিংস ঘোষনার পর ব্যাটিং শুরু করেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ২২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ৩ ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা মাহমুদুল হাসান জয় শুন্য রানে ফিরেন। তাদের দু’টি উইকেট নেন পাকিস্তানের স্পিনার সাজিদ খান।
চার নম্বরে নেমে আবারও ব্যর্থ হয়েছেন অধিনায়ক মোমিনুল হক। ১ রান করে রান আউট হন তিনি।
টপ-অর্ডারের ব্যর্থতার পথে হেঁটেছেন দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। সাজিদের ঘুর্ণিতে হার মেনে মুশফিক ৫ ও লিটন ৬ রান করে ফিরেন। ফলে ৪৬ রানে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সতীর্থদের যাওয়ার আসার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫০ বলে তিন বাউন্ডারিতে ৩০ রান করে সাজিদের পঞ্চম শিকার হন শান্ত। এরপর রানের খাতা খোলার আগেই সাজিদের বলে বোল্ড আউট হন মেহেদি হাসান মিরাজ।
ব্যাটারদের এমন ব্যর্থতায় ফলো-অনে আজই পড়ার উপক্রম হয় বাংলাদেশের। তবে সেটি হতে দেননি সাকিব আল হাসান। বল হাতে ব্যর্থ সাকিব সাত নম্বরে নেমে প্রতিরোধ গড়েছেন। ৩টি চারে ৩২ বলে ২৩ রান তুলে দিন শেষে অপরাজিত থাকেন সাকিব। ১০ বল খেলে খালি হাতে অপরাজিত তাইজুল ইসলাম।
পাকিস্তানের সাজিদ ১২ ওভারে ৩৫ রানে ৬ উইকেট নেন। চার ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে এই প্রথম পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিলেন ২৮ বছর বয়সী সাজিদ।
দিএডিটর৩৬৫/এমআরএম