ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তাদেরকে ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে দিতে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তারা।
এতে আহত হয়েছেন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের তানহা তাহসীন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মিত্রা সংঘ ও সজল কুন্ডু। আর বিভাগের নাম পাওয়া যায়নি এমন আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, মেহজাবিন পর্ণা, সাজেদুল ইসলাম সিজন, তাকিয়া ইসলাম, জুনায়েদ ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, মসিউর ইসলাম, ইরফান, রায়হান আহমেদ, মুনির হোসেন তালুকদার, সেলিম, তমাল, সিফাত আকাশ, জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব, হুমায়ূন কবির অপূর্ব। বাকি শিক্ষার্থীদের নাম জানা যায়নি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম এবং ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদও আহত হয়েছেন।
এদিকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর অবরুদ্ধ থাকা ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়। রোববার বেলা পৌনে তিনটার দিকে তিনি উপাচার্য ভবন থেকে বের হয়ে ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তার দাবি, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হঠাৎ করেই উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা চালান। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে থাকা কয়েকজন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী তাঁকে আগলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে নিয়ে যান।
তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাকে দেখে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য স্লোগান দিয়ে পথ অবরোধ করেছিলেন। উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক এখন আইসিটি ভবনের ভেতরে আছেন। বাইরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিচ্ছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ চলছে।
এদিকে পুলিশের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও যোগ দিয়েছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। শিক্ষক সমিতিসহ সব বিভাগের প্রধানেরা কর্মসূচিস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সব দাবি মানার আশ্বাস দেন। তখন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেন। এরপর উপাচার্য ভবনের সামনে গিয়ে উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন। উপাচার্যকে রক্ষা করতে গিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হামলায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আহত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোষ্ট জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগসহ তিনদফা দাবিতে সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরআগে শনিবার আন্দোলনরত ছাত্রীদের উপরে হামলা চালায় কয়েকজন ছাত্রলীগের কর্মী। নিম্নমানের খাবার, অব্যবস্থাপনাসহ নানা অভিযোগে বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন করে আসছেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।
দিএডিটর৩৬৫/এমআরএম