আফগানিস্তানের পার্বত্য প্রদেশ পাঞ্জশির দখল নিয়ে তালেবান ও ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্সে ফোর্সের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। গত চারদিন ধরে চলমান এই লড়াইয়ে এ পর্যন্ত শতাধিক নিহত হয়েছে। খবর বিবিসির।
বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান বাহিনীর দাবি করছে, পাঞ্জশিরে ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফোর্সের (এনআরএফ) পতন হয়েছে এবং প্রদেশটি এখন তালেবান দখলে।
তালেবান বাহিনীর এক কমান্ডার বলেন, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর কৃপায় আমরা পুরো আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। বিদ্রোহীরা পরাজিত হয়েছে এবং পাঞ্জশির এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।’
অন্যদিকে, এনআরএফ এর এক কর্মী জানায়, পাঞ্জশিরের দখল নিতে আসা সশস্ত্র তালেবান রক্ষীরা পিছু হটেছে এবং যারা এখনও রয়ে গেছে, তারা দ্রুত আত্মসমর্পণ করবে- এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এনআরএফ এর মুখপাত্র আলি নাজারি পাঞ্জশির বর্তমান অবস্থা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘পাঞ্জশিরের দখল নিতে আসা তালেবান বাহিনীর একটি অংশ ইতোমধ্যে পিছু হটেছে এবং কয়েকশ তালেবান রক্ষী আটকা পড়েছে। আটকা পড়া এই রক্ষীরা জানিয়েছে, তারা আত্মসমর্পণ করতে চায়। এই মুহূর্তে (পাঞ্জশিরে) এ বিষয়ক আলোচনা চলছে।’
ভিডিওবার্তার মাধ্যমে আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফোর্সের অন্যতম নেতা আমরুল্লাহ সালেহ বলেন, ‘পাঞ্জশির একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে- এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা তালেবান আগ্রাসনের মধ্যে আছি। যুদ্ধে দুই পক্ষেই হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘পাঞ্জশির কঠিন সময় পার করছে এবং প্রদেশটিকে তালেবান বাহিনীর দখলমুক্ত রাখতে তারা লড়াই অব্যাহত রেখেছেন। তালেবান বা আল কায়েদার মিত্র এই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে বরাবরের মতো এ বারও পাকিস্তান মদদ দিচ্ছে। আমরা আফগানিস্তানের পক্ষে আছি এবং (তালেবান বাহিনীর কাছে) আত্মসমর্পণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের মধ্যে শুধু উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জশিরের দখল তালেবান নিতে পারেনি। আফগানিস্তানের আহমেদ মাসুদ, সাবেক আফগান সেনা ও স্থানীয় কয়েক হাজার মিলিশিয়া তালেবানের সঙ্গে লড়াই করছে। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ ও তার অনুগত বাহিনীও মাসুদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।
এর আগে আহমেদ মাসুদের বাবা আহমেদ শাহ মাসুদ সোভিয়েত ও তালেবানের সঙ্গে লড়েছিলেন। সোভিয়েত কিংবা তালেবানের কেউই পাঞ্জশির দখল করতে পারেনি। তাকে বলা হতো পাঞ্জশিরের সিংহ। এবার তার ছেলে আহমেদ মাসুদ তালেবানের সঙ্গে লড়ছেন।
প্রদেশটিতে বসবাসরত দেড় থেকে দুই লাখ মানুষ লড়াইয়ের ব্যাপকতা বাড়তে থাকায় তাদের অধিকাংশই বর্তমানে দুর্গম পার্বত্য এলাকাগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
দ্যএডিটর৩৬৫/ জেডআই