মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া-মাদারীপুরের বাংলাবাজার রুটে চলচলারত ‘ফেরি কাকলী’ সঠিকভাবে পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ায় ফেরির ভারপ্রাপ্ত মাস্টার মো. বাদল হোসেন এবং হুইল সুকানী আব্দুর রশিদকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।বিআইডব্লিউটিসি আজ শুক্রবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করে।এর আগে শুক্রবার সকালে পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরিটি ধাক্কা দেয়। মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাওয়ার সময় কাকলী নামের কে-টাইপ ফেরি পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার সকাল পৌনে ৭ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ফেরি কাকলীর ধাক্কায় পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর খুঁটির পাইল ক্যাপের সামান্য কিছু অংশের কংক্রিট উঠে গেছে। এতে সেতুর তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তারপরও এমন ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। ফেরিটিতে থাকা যাত্রী ও যানবাহনের বড় ক্ষতি হতে পারতো। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।এর আগে গত ৯ আগস্ট রাতে রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর খুঁটিতে আঘাত করে। এতে ফেরিতে থাকা দুইটি প্রাইভেটকার ও একটি ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ফেরির ৫ যাত্রী আহত হয়। এ ঘটনায় পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ লৌহজং থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করে এবং ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার ও হুইল সুকানীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া গত মঙ্গলবার যুগ্ম সচিব ও বিআইডব্লিউটিসি’র পরিচালক (কারিগরি) রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়। কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার আগেই ফেরি আবার পদ্মা সেতুর খুঁটিতে আঘাত করে। আরো আগে ২৩ জুলাই নির্মাণাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ‘শাহজালাল’ নামে রো রো ফেরির সংঘর্ষ হয়। এতে ফেরিটির অন্তত ২০ জন যাত্রী আহত হন। সে ঘটনার পরও ফেরির ইনচার্জ ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার আব্দুর রহমান ও সুকানী সাইফুল ইসলামকে বরখাস্ত করে বিআইডব্লিউটিসি।মাওয়া নৌ পুলিশের আইসি জেএম সিরাজুল কবির জানান, কে টাইপ ফেরি কাকলী বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে মাওয়া আসার পথে পদ্মা সেতুর নীচ দিয়ে যাবার সময় ফেরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাওয়া প্রান্তের ১০ নং পিলারে ধাক্কা লাগে। ফেরিটির একটা অংশ ফেটে যায়।পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগেও চারবার ফেরি পদ্মা সেতুর পিলারে আঘাত হেনেছিল। এসব সেতু সেভাবেই তৈরি করা হয়। গত ১শ’ বছর এই নদীতে যেসব জলযান চলেছে, সেগুলো সেতুতে ধাক্কা দিলে কিছু হওয়ার আশঙ্কা নেই। বরং ফেরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।ফেরি কাকলির চালক মো. বাদল হোসেন বলেন ফেরিটি পদ্মা সেতুর ১১-১২ খুঁটির মাঝখান দিয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু নদীর প্রচন্ড স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়। এতে ফেরির একপাশে ফাটল ধরে। তবে ফাটল পানির স্তরের উপরে থাকায় ফেরিতে পানি ওঠেনি। পদ্মা সেতুর পিলারেরও কোনো ক্ষতি হয়নি। ধাক্কা লাগার পর ফেরিটি নিয়ে নিরাপদে শিমুলিয়া ঘাটে নিয়ে আসা হয়েছে। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেতুর ১০ নম্বর খুঁটিতে প্রচন্ড ধাক্কায় খুঁটির পাইল ক্যাপের কংক্রিট উঠে যায়। ফেরিতে থাকা এক যানবাহন আরেকটিকে ধাক্কা দেয়। অনেকই পড়ে যান। এই সময় ফেরিটিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
দিএডিটর৩৬৫/এমআরএম