নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জের মৈকুলি এলাকার ইউনাইটেড লেদার কারখানায় বুধবার এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার ব্রিগেডের ১৪টি ইউনিট প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) লে. কর্নেল জুলফিকার রহমান বলেন,বেলা ১২টা ১৪ মিনিটে আমরা আগুনের খবর পাই। খবর পাওয়া ১২ থেকে ১৪ মিনিটের মাথায় আমাদের প্রথম ইউনিট সেখানে পৌঁছে আগুন নেভানো শুরু করে। এরপর একে-একে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, কাঞ্চন, বন্দর, মন্ডলপাড়া, হাজীগঞ্জ, ঢাকার ডেমরা, হেডকোয়ার্টারসহ মোট ১৪টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পৌঁনে দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনি জানান, আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ তদন্তের পর বলা যাবে। তবে প্রতিষ্ঠানটিতে প্লাস্টিক, কাপড়, রেজিনসহ বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যের মজুদ থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রাসায়নিক দ্রব্য রাখার একটি বিশেষ নিয়ম রয়েছে সেটি এ প্রতিষ্ঠানে পরিপূর্ণভাবে মানা হয়নি। ফলে আগুন লাগার পর ভবনটি প্রচন্ড উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তাই আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ভেতরে ঢুকতে অসুবিধা হয়েছে। তিনি জানান, দ্রুততম সময়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে আগুন নেভানোতে অংশ নিতে পারা, লকডাউনের কারনে শ্রমিক না থাকা, পুলিশের সহযোগিতা ও প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ফায়ার ফাইটারদের তৎপরতা এ সব কিছুর কারনে এখানে সেজান জুসের মতো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেনি।
লেদার কারখানার জেনারেল ম্যানেজার দলিল উদ্দিন জানান, ইউনাইটেড লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লি. নামের প্রতিষ্ঠানটি এন হোসেন স্পিনিং এন্ড কটন মিলস এর অংগ প্রতিষ্ঠান। লকডাউনের কারনে ঈদের আগে থেকেই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিলো। আগামী ১১ তারিখে লকডাউন শেষে কারখানাটি খোলার প্রস্তুতি হিসেবে আজ কারখানার মেশিনারিজ মেরামত ও ধুলো পুরিস্কারের কাজ চলছিলো। আট-দশজন শ্রমিক এ কাজ করছিলেন। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে মিলের গুদামের একটি অংশের বাল্ব বিস্ফোরিত হয়ে কাপড়ের (কৃত্রিম চামড়ার নিচে আস্তর হিসেবে ব্যান্ডেজের কাপড়ের মতো যে পাতলা কাপড় দেয়া হয়) রোলের উপরে পড়ে। ফলে আগুন ধরে যায়। এর অল্প দূরেই কৃত্রিম চামড়া জোড়া লাগানোর আঠা, রেজিন ইত্যাদি রাসায়নিক দ্রব্যের ড্রাম ছিলো। আগুন এসব ড্রামে ধরে যায়।
ইউনাইটেড লেদারের অল্প দূরেই তাদের মূল প্রতিষ্ঠান এন হোসেন স্পিনিং এন্ড কটন মিলস অবস্থিত। এ প্রতিষ্ঠানটি চালু ছিলো। এ প্রতিষ্ঠানে ছত্রিশজন জন প্রশিক্ষিত ফায়ার ফাইটার রয়েছে। এছাড়া দুই প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং সরঞ্জাম রয়েছে। আগুন লাগার পরপরই এ প্রশিক্ষিত ফায়ার ফাইটাররা আগুন নেভানো শুরু করে।
দলিল উদ্দিন জানান, আগুন লাগার সময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন রুপগঞ্জ থানার এস আই মেহেদী। তিনি ইউনাইটেড লেদার থেকে ব্যাপক ধোঁয়া বের হতে দেখে প্রতিষ্ঠানে এসে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। রুপগঞ্জ থানায় খবর দেন। ইউনাইটেড লেদার ও এন হোসেন স্পিনিং এন্ড কটন মিলস এর বিপুল সংখ্যক শ্রমিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদীর তৎপরতা, ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অক্লান্ত কাজ ও আমাদের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং সিস্টেমের সমন্বয়ের কারণে আলহামদুলিল্লাহ আমরা বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছি।
দিএডিটর৩৬৫/এমআরএম