রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার পর এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা গেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের। জবাবে টিয়ারশেল ছুড়তে দেখা যায় পুলিশকে। এতে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার পর এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় আট থেকে ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীদের বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি ছিল। তবে পুলিশ বলছে, সেখানে কর্মসূচি পালনের জন্য বিএনপি অনুমতি নেয়নি।
জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট-ছোট মিছিল নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা চন্দ্রিমা উদ্যানে পূর্ব পাশে জমায়েত হতে থাকে। এরপর তারা উদ্যানের ভেতর প্রবেশ করতে চাইলে উপস্থিত পুলিশের সদস্যরা বাধা দেয়। পুলিশ জানায়, ভেতরে প্রবেশের অনুমতি নেই। তখন জোর করে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রবেশ করতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তখন পুলিশ নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট ও লাঠিচার্জ করে।
পুলিশের ফাঁকা গুলিতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদৌসি আহমেদ মিষ্টিসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনার সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান উত্তেজিত নেতাকর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। এসময় কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে শহীদ জিয়ার কবর জিয়ারত করতে এলে পুলিশ বাধা দেয়। হঠাৎ রাবার বুলেট ছোড়ে এবং নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। এতে উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আমিনুল ইসলাম বলেন, জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিতে এসেছিলাম আমরা। পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া ছিল। কিন্তু জিয়ার কবরে ঢুকতে সব পথ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশ আমাদের ওপর টিয়ারশেল ও গুলি নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
আমিনুল নিজের বাম কান দিয়ে রক্ত ঝরে পড়া দেখিয়ে বলেন, দেখেন পুলিশ আমাকে গুলি করে কি অবস্থা করেছে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে আমিনুল ইসলাম ছাড়াও ছাত্রদলের নেতা শিশির, এমদাদ ও আরিফ গুলিবিদ্ধ হয় বলেও দাবি করেন বিএনপির নেতারা।
সংঘর্ষের পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘটনাস্থলে যান। এরপর তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল। আগেও তারা এখানে এসে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু আজ বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের পক্ষের উচ্ছৃঙ্খল কয়েকজন এসে হট্টগোল শুরু করে পুলিশের ওপর চড়াও হন। এতে আট থেকে ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
দ্যএডিটর৩৬৫/ জেডআই