মাসকাওয়াথ আহসানঃ
গ্রীক দার্শনিকেরা ফেসবুকে থাকলে তাদের স্টেটাসের কমেন্টে যা লেখা হতো।
এরিস্টোফিনিস লিখলেন, প্রত্যেকটি পাথরের নীচে একজন রাজনীতিবিদ উঁকি দেয়।
সহমত ভাইঃ এরিস্টোফিনিস হালায় সুশীল সাজতেছে। আঙ্গুর ফল টক। ভোটে দাঁড়াইলে জামানত হারাইবো।
শিবব্রত দাদাঃ এরিস্টোফিনিস বিরাজনীতিকরণের কথা বলতেছে; উদ্দেশ্য মহত নয়। এ ধরণের লোকগুলোর ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
শরিয়ত ভাইঃ জ্ঞানী সাজতে আসছে। আল্লাহ চাইলে পাথরেও ফুল ফুটাইতে পারেন। নাসতেক কুনহানকার।
হোমার লিখলেন, একজন প্রকৃত বীর তার দেশের জন্য ছাড়া আর কোন ক্ষেত্রে তরবারি তুলে নেননা।
সহমত ভাইঃ দেশের কোন কাজটাতে হোমার আসছে। মুক্তিযুদ্ধে উনার ভূমিকা কি! জানি জানি সবই জানি; ছাগু কুনহানকার।
শিবব্রত দাদাঃ তরবারি শব্দটা শুনেই বুঝেছি; হোমার লোকটা মৌলবাদী। তিনি তালি-বানদের উতসাহিত করতে এসেছেন। সে কি পাকিস্তানপন্থী!
শরিয়ত ভাইঃ যেই লোকের মুখে আল্লা খোদার নাম নাই; সে জানি জিহাদের কথা আর না কইতে আসে। জানিরে জানি হোমার শাহবাগী।
হাইপেশিয়া লিখলেন, নিজের চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করো; ভুল চিন্তা করার চেয়ে চিন্তা না করাই ভালো।
সহমত ভাইঃ একটু শিক্ষিত বইলা চিন্তা করার অধিকার আপনার একার না। জ্ঞানপাপী ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কুনহানকার।
শিবব্রত দাদাঃ চিন্তার দায়িত্বটা বুদ্ধিজীবীদের কুক্ষিগত করার ছল এটা। আমরা এসব বুঝি। জিন্নার পোলা কুনহানকার।
শরিয়ত ভাইঃ নিজেরে আলেম ভাববেন না; এতোই যদি মুরোদ থাকে ইব্রাহিম হুজুরের সঙ্গে বাহাসে আসেন। এইসব আলগা ভাবের কারণে প্রগতিশীলগো দেখতারিনা।
হেরাক্লাইটাস লিখলেন, কেউ একই নদীর স্রোতে দুবার অবগাহন করতে পারে না; কারণ সে দ্বিতীয়বার যখন নদীতে নামে সেও ঐ একই মানুষ নয়; নদীর স্রোতও সেই পুরোনো স্রোত নয়।
সহমত ভাইঃ সুশীলেরা গিরগিরির মতো রঙ বদলায়; তাই সে একই নদীতে দুবার সাঁতার কাটতে পারে না। আমরা তো বদলাই না; জয় বাংলার নদীতে আমৃত্যু সাঁতার কাটবো।
শিবব্রত দাদাঃ লোকটি বহুরুপী। তার মতলব আছে। সে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে চব্বিশের অভ্যুত্থানের কথা বলছে।
শরিয়ত ভাইঃ নদীর স্রোত বদলানোর কথা না। কিন্তু আপনার বাপের দেশ ভারতের কারণে নদীগুলির স্রোত বইলা আর কিছু নাই। আপনি কি কেবলা বদলাইতেছেন নাকি; যে দ্বিতীয়বার একই মানুষ থাকতে পারতেছেন না।
ডেমোক্রিটাস লিখলেন, সুখ সম্পদ কিংবা স্বর্ণে নয়; সুখ থাকে আত্মার মাঝে।
সহমত ভাইঃ মুখে সোনার চামচ মুখে নিয়া জন্মাইলে এইসব ভাবের কথা আসে। চাঁন্দাবাজি না করলে যাগো বাড়িতে বাজার হয়না; তাগো জিগায় দেখেন। আইছে আমার আত্মা মারাইতে।
শিবব্রত দাদাঃ সম্পদ করতে না পেরে নিজেকে প্রবোধ দিয়ে লাভ নেই। পারবেন আম্বানি কিংবা আদানির মতো সুখি হতে; কমপক্ষে বাপ্পি লাহিড়ীর মতো স্বর্ণের অলংকার কিনতে। অযথা অবাস্তব কথা বলবেন না!
শরিয়ত ভাইঃ সুখ দেওয়ার মালিক আল্লাহ; সেইটা সম্পদের মাধ্যমেও আইতে পারে; স্বর্ণের মাধ্যমেও আসতে পারে। কুরান সুন্নার আলোকে জীবন কাটাইতে চেষ্টা করেন; অযথা শিরক করবেন না!
সফোক্লিস লিখলেন, প্রজ্ঞা সম্পদের চেয়ে ভারী।
সহমত ভাইঃ হাজার কোটি বানাইতে পারেন নাই; প্রাডো পোরশ কিনতে পারেন নাই। অহন আঙ্গুর ফল টক তো হইবোই। লুজার কুনহানকার।
শিবব্রত দাদাঃ চাণক্য বলেছেন, সম্পদ প্রজ্ঞা আনে। এই লোকটাকে যদি আম্বানির বাড়িতে ঘুরিয়ে আনতে পারতাম; তাহলে সে বুঝতো কোনটা ভারি। আপনার যদি এতোই প্রজ্ঞা থাকতো তাহলে রিক্সা করে ঘুরতেন না; একটা গাড়ি থাকতো।
শরিয়ত ভাইঃ ইসলাম ধর্মে সম্পদ তৈরিতে উতসাহিত করা হইছে। আপনার মতোন রিক্সায় চইড়া সেমিনারে যাওনের চেয়ে শফি হুজুরের হেলিকপ্টারে চইড়া দীনের দাওয়াত দিতে আসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এথেনিউয়াস লিখলেন, পুরনো কাঠ পুড়ে ভালো, পুরনো খুশিজল পানে স্বাদু, পুরনো বন্ধু বিশ্বাসযোগ্য, পুরনো লেখক পড়তে ভালো।
সহমত ভাইঃ আজ থেকে আপনার ওপর শ্রদ্ধা হারাইলাম; আপনি নতুন প্রজন্মের ওপর আস্থা রাখতে পারতেছেন না।
শিবব্রত দাদাঃ ফেসবুকে নতুন বন্ধু হইতেছে না মনে হয়। কি করবেন! বুইড়া হইছেন এখন ঘাটের মড়ার লগে বন্ধুত্ব করবো কেডা; আপনার চিতায় পুরান কাঠ দিতে কমুনে।
শরিয়ত ভাইঃ মদ খাওয়া ইসলামে হারাম; আমি আপনার পোস্ট রিপুট করতেছি। ফেসবুকে বেশরিয়তি কায়কারবার করবেন না।
হেসিওড লিখলেন, প্রগলভ নারীকে তোমার দখল নিতে দিওনা, তোমাকে পরিচালিত কিংবা ঠকাতে দিওনা; কারণ সে তোমার সঞ্চয়ের পেছনে রয়েছে।
ললিতাদিঃ ফেসবুকে মিসোজিনি করবেন না। টক্সিক লোক কোথাকার।
আনারকলি আপাঃ আমার এক পরিচিত আপা বলছে, এই লোক প্রতিদিন তার বউ পিটাইতো।
রাবেয়া আপাঃ মেয়েরা তোমরা পর্দা পুসিদা সহকারে চলো; তাহলে এইরকম খচ্চর লোক বাজে কথা বলতে পারবে না।
বুশরা আপাঃ লোকটাকে রিপোর্ট করুন। সে মেল শভিনিস্টিক লোক। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে পুরো নারী জাতির ওপর দায় চাপাচ্ছে।
মাসকাওয়াথ আহসান, সম্পাদক, দ্য এডিটর থ্রি সিক্সটি ফাইভ, প্রধান সম্পাদক, ই-সাউথ এশিয়া।