বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমের মরদেহ দেশে পৌঁছেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০২৬ ফ্লাইটে তাঁর মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসেছে।
গত ৩০ আগস্ট দুপুরে মারা যান ক্যাপ্টেন নওশাদ। পরে তার মরদেহ ভারতের নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালের মর্চুয়ারিতে ছিল।
কাতারের রাজধানী দোহা থেকে যাত্রী নিয়ে দেশে ফেরার পথে বিমানের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের এয়ারক্রাফট নাগপুরে থামে। ওই ফ্লাইটটি ক্যাপ্টেনের মরদেহ বাংলাদেশে এনেছে।
ক্যাপ্টেন নওশাদকে শ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত হন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ও সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বিমানের এমডি ও সিইও ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালসহ বিমান ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমান পাইলটরাও শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন।
গত ২৭ আগস্ট সকালে ওমানের মাস্কাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে বিজি-০২২ ফ্লাইটটি নিয়ে ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন নওশাদ অসুস্থ বোধ করেন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) কাছে ফ্লাইটটিকে জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানান। একই সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে ফ্লাইটের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন। কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ফ্লাইটটিকে নিকটস্থ নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিলে কো-পাইলট ক্যাপ্টেন মুস্তাকিম ফ্লাইটটি অবতরণ করান।
উড়োজাহাজটির (বোয়িং ৭৩৭-৮০০) ফ্লাইটে ১২৪ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে ছিলেন। ওইদিনই আরেকটি ফ্লাইটে আট সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল নাগপুরে যায়। সেদিনই মধ্যরাতের পর বিমানটিকে যাত্রীসহ ঢাকার বিমানবন্দরে আনা হয়।
ক্যাপ্টেন নওশাদকে নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে দুই দিন চিকিৎসার পর তাঁর অবস্থার অবনতি হলে ২৯ আগস্ট হাসপাতালের সার্জিক্যাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এসআইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। হার্ট অ্যাটাকের পর তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় বলে জানিয়েছিলেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমের দুই বোন ২৯ আগস্ট রাতে নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে যান। তারা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ক্যাপ্টেন নওশাদের ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা চালু রাখার পক্ষে মত দেন। তবে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ৩০ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে না ফেরার দেশে চলে যান ক্যাপ্টেন নওশাদ।
উল্লেখ্য, নওশাদ ও তার ফার্স্ট অফিসারের কারণে ২৭ আগস্ট জীবন রক্ষা পেয়েছিল ওমান থেকে ঢাকার উদ্দেশে আসা ১২৪ যাত্রীর। তবে এটিই প্রথম নয়, পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালে আরেকটি দুর্ঘটনার হাত থেকে ১৪৯ যাত্রী আর সাত ক্রু’র জীবন বাঁচিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ। ২০১৭ সালে ক্যাপ্টেন নওশাদকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রশংসাপত্র পাঠিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ক্যাপ্টেন রন অ্যাবেল।
দ্যএডিটর৩৬৫/ জেডআই