দেহে করোনাভাইরাস প্রবেশ প্রতিরোধে মাস্কের কোনো বিকল্প নেই। বাইরে বের হলে মাস্ক পড়েতই হয়। তা না হলে যে কোনো সময় যেকোনো ভাবে ভাইরাসে আক্রন্ত হতে পারেন যে কেউ। হাট-বাজার, কর্মক্ষেত্র বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বাইরে গেলে অন্যের সাথে কথা বলতেই হয়। এক্ষেত্রে মাস্ক পড়ার কোনো বিকল্প নেই।
মাস্কের বিভিন্ন ধরন দেখা যায়। অনেকেই হোমমেড মাস্ক পড়েন। আবার অনেকেই বাজার থেকে কেনা কাপড়ের বা সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করেন। কিন্তু ইদানিং দেখা যায়, অনেকেই মাস্ক সঠিকভাবে পড়া বা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে তেমন সচেতন নয়। অনেকেই ‘মাস্ক পড়তে হবে তাই পড়ি’ এমন মনোভাব নিয়েও মাস্ক ব্যবহার করে যাতে এটি ব্যবহারে কোনো গুরুত্ব থাকে না।
বাজারে অনেক ধরনের মাস্কের মধ্যে কোন মাস্ক কিভাবে পরতে হয় সেটা অনেকেই জানেন না। অনেকেই সহজলভ্য কিছু মাস্ক স্বল্প দামে কিনে ব্যবহার করেন। আবার অনেকে সার্জিক্যাল মাস্ক পরিধান করলেও মুখের সাথে ফিটিং না হওয়ার কারণে জীবাণু প্রবেশের আশঙ্কা থেকেই যায়। সেজন্য মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে মুখের সাথে এর ফিটিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
মাস্ক একটি নাকি দুটি পড়তে হবে এটি নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা ও তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্টোল (সিডিসি) থেকে দুটি মাস্ক পরার কথা বলা হয়েছে। জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, কম দামি, ভালো, বেশি ভালো যে মাস্কই ব্যবহার করা হোক না কেন একসঙ্গে দুটি পরার কথা বলা হয়েছে। দুটি মাস্ক পরলে করোনা ভাইরাস থেকে ৮৫-৯৫ শতাংশ পর্যন্ত সংক্রমণ ঝুঁকি এড়ানো যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির গবেষণার তথ্যমতে দেখা যায়, মাস্ক একটি কিংবা দুটির ব্যবহার এই দুই ক্ষেত্রেই এর স্তর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে মাস্কগুলোতে দুই স্তর সেগুলো অরক্ষিত অবস্থায় থাকে। আর তিন স্তরবিশিষ্ট মাস্কগুলো ভালো সুরক্ষা দেয়। দুইস্তরবিশিষ্ট মাস্ক ৫৬.৬ শতাংশ ও তিনস্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক ৮৫.৪ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
তিন স্তর বিশিষ্ট বা মাস্ক বা দুটি দুই স্তর বিশিষ্ট মাস্ক পরিধান মোটামুটি আস্থা রাখার মতো সুরক্ষা প্রদান করে। তবে এক্ষেত্রে ভালোভাবে নিশ্বাস নিতে পারার বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃত্রিম তন্তুর তৈরি মাস্কে গরম লাগে বেশি, ঘামও হয়। তাই অস্বস্তি বেশি অনুভূত হয়। তাই এগুলো যথাসম্ভব পরিহার করাই উত্তম।
তাই তিন স্তরের মাস্ক ব্যবহার করুন। দুটি মাস্ক পরার ক্ষেত্রে নিশ্চিত করুন যে আপনি আরাম বোধ করেছেন কি না। অনেক সময় দেখা যায়, মাস্ক অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ কারণে ভালো মানের আরামদায়ক মাস্ক পরুন। মাস্ক পরার পর ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারছেন কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখুন।
এন-৯৫ মাস্ক একটিই যথেষ্ট সুরক্ষা দিতে সক্ষম। সার্জিক্যাল মাস্কের ক্ষেত্রে দুটি ব্যবহার করলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। তাই একটি তিনস্তর বিশিস্ট সার্জিক্যার মাস্ক বা একটি সার্জিক্যাল ও একটি কাপড়ের মাস্ক পরিধান করাই শ্রেয়।
শাড়ি বা ওড়নার ব্যবহার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সুরক্ষা দিতে পারে না। তাই নারীদের ক্ষেত্রে এই বিভ্রান্তিকর ধারণাটি ত্যাগ করতে হবে। আর মাস্ক কোনোভাবেই নামিয়ে রাখা যাবে না।
গন্তব্যে ফিরে মাস্ক খোলার সময় হাত ধুয়ে বা স্যানিটাইজ করে দুই দিকের দুটি ফিতা ধরে খুলতে হবে। অত:পর তারপর ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আবার হাত পরিষ্কার ভালোভাবে পরিষ্কার করার পর মুখমন্ডল পরিষ্কার করতে হবে।
দ্যএডিটর৩৬৫/ জেডআই