মার্চেন্টের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে সময়মতো অর্থ পরিশোধ না করা এবং গ্রাহকের কাছে অগ্রিম অর্থ নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করার প্রেক্ষিতে ই-ভ্যালি নামের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটিকে কারণ দর্শাতে বললে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ৬ মাস সময় চেয়ে আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
৩১ জুলাই ২০২১ তারিখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের পরিচালক বরাবর আবেদন পত্র দাখিল করে প্রতিষ্ঠানটি। গত ১৯ জুলাই ২০২১ তারিখে ইভ্যালির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা কেন গ্রহণ করা হবে না তার কারণ দর্শাতে নোটিশ দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আলোচিত এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের সময়মতো অর্থ ও পণ্য পরিশোধ না করতে পারায় এর কার্যকলাপ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে সরকার। সরকারি কর্তৃপক্ষ মনে করে, প্রতিষ্ঠানটির কার্যকলাপে বিপুল সংখ্যাক গ্রাহক ও মার্চেন্ট আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে, এরই পরিপ্রেক্ষিতে কারণদর্শানোর নোটিশটি দেওয়া হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেশকৃত আবেদন পত্রে কারণ দর্শানোর সময় বাড়াতে ইভ্যালির জবাব দিয়েছে, “তৃতীয় নিরপেক্ষ নিয়ন্ত্রক দ্বারা আমাদের সম্পূর্ণ আর্থিক বিবরণী এবং কোম্পানির ভ্যালুয়েশনসহ উপস্থাপন করার জন্য এবং উক্ত পত্রের দ্বিতীয় অধ্যায়ে বর্ণিত ২-এর ‘ক’ হতে ‘ঙ’ পর্যন্ত বিষয়ে আমাদের অবস্থান এবং সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি উপস্থাপনের জন্য ন্যূনতম আরও ৬ (ছয়) মাস সময় প্রয়োজন। উক্ত আর্থিক বিবরণীতে আমাদের যাবতীয় হিসাব যথা: কোম্পানির মোট সম্পদ, দেনার পরিমাণ, মার্চেন্টদের কাছে দেনার পরিমাণ, মার্চেন্টদের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী ক্রেডিট লাইনের যাবতীয় বিবরণ প্রদান করা হবে।”
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, “এই সময়ের মধ্যে ইভ্যালি পূর্বের প্রতিশ্রুত পণ্যের ডেলিভারি ক্রমান্বয়ে সমাপ্ত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে এবং প্রতি ১৫ দিন অন্তর ডেলিভারির অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট মন্ত্রণালয়কে প্রেরণ করবে।” এছাড়া ১ হাজার কোটি টাকার একটি বিনিয়োগ চুক্তি করার বিষয়েও মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে ইভ্যালি। যা থেকে প্রাথমিকভাবে এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ২০০ কোটি টাকা পাবে। যদিও ১ আগস্ট দুপুরে জমা দেওয়া ওই চিঠিতে বিনিয়োগকারী কোম্পানির নাম উল্লেখ করেনি তারা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পূর্বে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা পদ্ধতিও জানতে চেয়েছে। যার সর্বশেষ সময় ছিল গতকাল ১ আগস্ট পর্যন্ত। গত ৪ জুলাই অগ্রিম অর্থ গ্রহণ ও অর্থ নিয়েও পণ্য সরবরাহে বরখেলাপের অভিযোগে ও মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের আশঙ্কার প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়াও ইভ্যালির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাওয়া আর্থিক অনিয়মগুলো তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) পৃথক চিঠি পাঠায় মন্ত্রণালয়।