আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল বিমানবন্দরের কাছে গাড়ি লক্ষ্য করে আবারও ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ড্রোন হামলা চালানোর মাধ্যমে বিমাবন্দরে আরেকটি আত্মঘাতী হামলা ঠেকানো হয়েছে বলে দাবি করছেন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা।
কাবুল বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ধার অভিযান শেষ হতে মাত্র দুদিন বাকী থাকতে রবিবারের ড্রোন হামলাটি হলো। খবর বিবিসি অনলাইনের।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমাণ্ড বলছে, একটি গাড়িতে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল যাতে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর আফগান শাখার (আইএস-কে) অন্তত একজন সদস্য অবস্থান করছিল।
কাবুল বিমানবন্দরে আরেকটি সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে বলে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে দিয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে এক আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ১৭০ জন মানুষ নিহত হয়। এদের মধ্যে ১৩ জন আমেরিকান সৈনিকও ছিল। ওই হামলার দায় স্বীকার করে আইএস-কে।
রবিবার মার্কিন কেন্দ্রীয় কমাণ্ডের ক্যাপ্টেন বিল আরবান বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘আসন্ন হুমকি’ নির্মূল করতে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। আমরা নিশ্চিত, আমরা সফলভাবেই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছি।”
তিনি আরো বলেন, “যে গাড়িকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা হয়েছে সেখানে দ্বিতীয় একটি বিষ্ফোরণ ঘটে যা ইঙ্গিত দিচ্ছে সেখানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিষ্ফোরক রাখা ছিল। কেন্দ্রীয় কমাণ্ড সেখানে বেসামরিক হতাহতের খবর সম্পর্কে ওয়াকিবহাল আছ। এটা পরিষ্কার নয় সেখানে ঠিক কী ঘটেছে, তবে আমরা তদন্ত করছি”,
এদিকে আফগান পুলিশ জানিয়েছে কাবুল বিমানবন্দরের কাছে একটি বাড়িতে রকেট হামলায় একটি শিশু মারা গেছে। এর আগে বিভিন্ন সূত্রের খবরে বলা হয়েছিল, কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিরাট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কোন কোন সূত্র এটিকে একটি রকেট হামলা বলে বর্ণনা করেছে।
সামাজিক মাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যায়, সেখান থেকে ধোঁয়া উঠছে আকাশে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, সেখানে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে কিভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা এখনও পরিস্কার নয়।
বিবিসির সাংবাদিকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এটি হয়তো একটি রকেট হামলা ছিল এবং এই রকেট বিমানবন্দরের কাছে একটি বাড়িতে আঘাত করেছে, বিমানবন্দরে নয়। কোন হতাহতের খবর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে বিমানবন্দরের কাছে শোনা বিস্ফোরণের সঙ্গে মার্কিন হামলার কোন সম্পর্ক আছে কীনা সেটা পরিস্কার নয়।
কাবুলে এখন আর খুব বেশি বিদেশি সাংবাদিক নেই। তবে আল জাজিরার একজন সাংবাদিক, সেখান থেকে তার এক রিপোর্টে বলছেন, আজ সকালে তিনি কাবুল বিমানবন্দরে একটি মার্কিন বিমানও দেখেননি। এদিকে নেটোর অন্যসব দেশ এরই মধ্যে তাদের উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করে চলে এসেছে। সর্বশেষ বৃটেনের উদ্ধার ফ্লাইটগুলো গতকাল কাবুল ছেড়েছে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতও আফগানিস্তান ছেড়েছেন।
রয়টার্স বার্তা সংস্থা একজন পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলছে, এই অভিযান কখন শেষ হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি, তবে এখনো এক হাজারের মতো বেসামরিক নাগরিক বিমানবন্দরে আছে সেখান থেকে ফ্লাইট ধরার আশায়।
অন্যদিকে তালেবান বলছে, ৩১ অগাস্টের পর বিমানবন্দরের দায়িত্ব নেয়ার জন্য তারা পুরোপুরি প্রস্তুত।
দ্যএডিটর৩৬৫/ জেডআই