ডেস্ক রিপোর্ট : ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ও হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এমভি অভিযান-১০ এর লঞ্চ মালিক মো. হামজালাল শেখকে রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার ভোরে কেরানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। লঞ্চ দুর্ঘটনার পর ওই লঞ্চের মালিক মো. হামজালাল শেখ আতœগোপন করতেই ওই এলাকাতে তার এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিল।
সোমবার সকালে র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গ্রেফতারের বিষয়টি বাসস-কে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকার কেরনীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অভিযান-১০ এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত শিশু, নারী ও পুরুষসহ ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৭ জনেরই বাড়ি বরগুনায়। এ ঘটনায় আহত রয়েছে প্রায় শতাধিক যাত্রী।
এমভি অভিযান-১০ এ লঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নৌ আদালতে করা মামলায় লঞ্চের চার মালিকসহ আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গত রোববার দুপুরে নৌপরিবহন আদালতের বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ জয়নাব বেগম এ পরোয়ানা জারি করেন।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন জানান, রোববার দুপুরে নৌপরিবহন অধিদপ্তরে অবস্থিত নৌ আদালতে অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান বাদি হয়ে এ মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, লঞ্চটির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির চার মালিক হামজালাল শেখ, শামিম আহম্মেদ, রাসেল আাহাম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি, লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় মাস্টার খলিলুর রহমান ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম।
দুর্ঘটনার মামলা হওয়ায় আইন অনুযায়ী অভিযান-১০ লঞ্চের ফিটনেস সনদ, নিবন্ধন ও মাস্টার-চালকদের সনদ স্থগিত করা হয়েছে। আসামিদের নামে অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ, ১৯৭৬এর ৫৬, ৬৬, ৬৯ ও ৭০ ধারায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র না থাকা, জীবন রক্ষাকারী পর্যাপ্ত বয়া ও বালুর বাক্স না থাকা, ইঞ্জিন রুমের বাইরে অননুমোদিতভাবে ডিজেল বোঝাই অনেক ড্রাম রাখা এবং রান্নার জন্য গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডার রাখার অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার সকালে বরগুনার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন জেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম নাসির।
বিচারক মুহাম্মদ মাহবুব আলম আবেদন গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন। মামলায় আরও ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এই মামলাতেই হামজালাল শেখকে গ্রেফতার দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের গনমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
দিএডিটর৩৬৫/এমআরএম