ডেস্ক রিপোর্ট : নিজের ৭ ডেলিভারিতে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের লাগাম বাংলাদেশের হাতে তুলে দিয়েছেন পেসার এবাদত হোসেন। দ্বিতীয় ইনিংসে চতুর্থ দিন শেষে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে মাত্র ১৭ রানে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড।
প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের ৩২৮ রানের জবাবে বাংলাদেশ করে ৪৫৮ রান করে। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ১৩০ রানের লিড পায় টাইগাররা। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে দিনের শেষ সময়ে এবাদতের বোলিং তোপে বেকাদায় নিউজিল্যান্ড। চতুর্থ দিন শেষে ৫ উইকেটে ১৪৭ রান তুলেছে কিউইরা। এবাদত ৩৯ রানে নেন ৪ উইকেট।
তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ৪০১ রান । ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৭৩ রানে এগিয়েছিলো টাইগাররা। চার ব্যাটার হাফ-সেঞ্চুরি করেন।
তবে দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন ইয়াসির আলি ও মেহেদি হাসান মিরাজ। ইয়াসির ১১ ও মিরাজ ২০ রান নিয়ে দিন শুরু করেন।
রানের গতি ধরে রাখা মিরাজ ইনিংসে বাংলাদেশের পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে হাফ-সেঞ্চুরি পাবার পথেই ছিলেন। কিন্তু সাউদির বলে উইকেটের পেছনে ব্লান্ডেলকে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৪৭ রানেই বিদায় নেন মিরাজ। তিনি ৮৮ বল খেলে ৮টি চার মারেন।
মিরাজ ফেরার কিছুক্ষণ পর থামেন ইয়াসিরও। মিরাজের মতই বল মোকাবেলা করেছেন তিনি। ৮৫ বল খেলে মাত্র ১টি চারে ২৬ রান করেন ইয়াসির। তাকে শিকার করে ইনিংসে প্রথম উইকেট নেন পেসার কাইল জেমিসন।
৩৫০ রানের মধ্যে মিরাজ-ইয়াসিরের বিদায়ের পর বাংলাদেশের টেল-এন্ডাররা লড়াই করতে পারেননি। ৮ রান যোগ হবার পর শেষ ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তাসকিনকে ৫ রানে সাউদি ও শরিফুলকে ৭ রানে বোল্ট আউট করেন। ৪৫৮ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। প্রথম ইনিংস থেকে লিড ১৩০ রানের।
নিউজিল্যান্ডের বোল্ট ৮৫ রানে ৪টি, ওয়াগনার ১০১ রানে ৩টি ও সাউদি ১১৪ রানে ২ উইকেট নেন।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগ মুর্হূতে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে নিউজিল্যান্ড। দেখেশুনেই খেলছিলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার অধিনায়ক টম লাথাম ও উইল ইয়ং। নবম ওভারে নিউজিল্যান্ড শিবিরে আঘাত হানেন বাংলাদেশের পেসার তাসকিন। প্রথম ইনিংসে দারুন বল করলেও,উইকেটশুন্য তাসকিন ১৪ রান করা লাথামকে বোল্ড করেন ।
এরপর বড় জুটি গড়ার দিকে নজর ছিলো আরেক ওপেনার ইয়ং ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ডেভন কনওয়ের। কিন্তু জুটিতে ৩৪ রানের বেশি করতে দেননি এবাদত। ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান কনওয়েকে শিকার করেন এবাদত। গালিতে সাদমানকে ক্যাচ দিয়ে ১৩ রানে থামেন কনওয়ে।
৬৩ রানে দ্বিতীয় উইকেটে পতন ঘটে নিউজিল্যান্ডের। এ অবস্থায় বড় জুটির লক্ষ্যই ছিলো স্বাগতিকদের। সেই আশা পূরণও করেন অভিজ্ঞ রস টেইলর ও ইয়ং। তৃতীয় উইকেটে ১৭৫ বলে ৭৩ রান যোগ করে নিউজিল্যান্ডকে লিড এনে দেন ইয়ং ও টেইলর।
তবে এই জুটির স্কোর ৭৩ হতো না, কারন দু’টি ক্যাচ হাতছাড়া করেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ৩১ রানে থাকা ইয়ংয়ের ক্যাচ ফেলেন লিটন। আর ১৭ রানে মিড উইকেটে টেইলরের ক্যাচ নিতে পারেননি সাদমান। দু’বারই হতভাগা বোলার ছিলেন মিরাজ। জীবন পেয়েই এই ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন ইয়ং ও টেলর।
ইয়ং-টেইলর জুটি ভাঙ্গতে যখন মরিয়া বাংলাদেশ, তখনই ত্রানকর্তার ভূমিকায় জ¦লে উঠেন এবাদত। নিজের ১৩তম ও ইনিংসের ৫৪তম ওভারের তৃতীয় বলে ইয়ংকে বোল্ড করেন তিনি। ঐ ওভারের পঞ্চম বলে ক্রিজে নতুন ব্যাটার নিকোলসের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন এবাদত। ৩ বলে ২ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান এবাদত।
৫৫তম ওভারে মিরাজ মেডেন নেন। ৫৬তম ওভারে বল হাতে নিজের আগুন ডেলিভারি অব্যাহত রাখেন এবাদত। ঐ ওভারের তৃতীয় বলে নিউজিল্যান্ডের উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলকেও লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন এবাদত। নিকোলস ২ বল ও ব্লানডেল ৪ বল খেলে খালি হাতে ফিরেন। আর ৭টি চারে ১৭২ বলে ৬৯ রান করেন ইয়ং।
এবাদতের তোপে ২ উইকেটে ১৩৬ থেকে ৫ উইকেটে ১৩৬ রানে নিউজিল্যান্ডকে পরিণত করে শেষ বিকেলে ম্যাচের লাগাম হাতে নিয়ে নেয় বাংলাদেশ।
দিনের শেষ দিকে বাকী ৪৫ বল সতর্কতার সাথে পার করে দেন টেইলর ও রাচিন রবীন্দ্র। টেইলর ৩৭ ও রবীন্দ্র ৬ রানে অপরাজিত আছেন। এবাদত ১৭ ওভার বল করে ৩৯ রানে ৪ উইকেট নেন। তাসকিন ২২ রানে ১ উইকেট নেন।
দিএডিটর৩৬৫/এমআরএম